দেবদাস শতবর্ষ পেরিয়ে (পেপারব্যাক)
দেবদাস শতবর্ষ পেরিয়ে (পেপারব্যাক)
৳ ২৫০   ৳ ২১৩
১৫% ছাড়
Quantity  

৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY

প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়;  ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER

একাডেমিক বইয়ে ১০% পর্যন্ত  ছাড়

Home Delivery
Across The Country
Cash on Delivery
After Receive
Fast Delivery
Any Where
Happy Return
Quality Ensured
Call Center
We Are Here

শতবর্ষ ধরে টিকে থাকা কম কথা কথা নয়। সেই যে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন ‘আজি হতে শতবর্ষ পরে কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি।’ শরচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এমন কিছু বলেননি। কিন্তু আমরা বলতে পারি প্রকাশের শতবর্ষ পরেও তার উপন্যাস ‘দেবদাস’ এখনও পড়ে চলেছেন মুগ্ধ পাঠক। শুধু পড়া নয়, বাংলা ভাষায় সর্বাধিক মুদ্রিত এবং পঠিতের তালিকায় রাখা যায় এ উপন্যাসকে। এই উপন্যাস সর্বাধিক চর্চিতও বটে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চলচ্চিত্র হয়েছে ‘দেবদাস’ নিয়েই। শুধু বাংলা ভাষায় নয়, তামিল, তেলেগু, মালায়ম, হিন্দি ভাষায় চলচ্চিত্র হয়েছে দেবদাস নিয়ে। ইংরেজিসহ বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে দেবদাস। ১৯১৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ‘দেবদাস’। ২০১৭ সালে প্রকাশনার শতবর্ষ পার করে দেখা যায় অন্তত বাংলাদেশে অসংখ্য প্রকাশকই মুদ্রণ করেছে ‘দেবদাস’। প্রায় শিক্ষিত সকলের ঘরেই অন্তত দেবদাসের একটি সংস্করণ অনিবার্য। ফুটপাথ থেকে অভিজাত বইয়ের দোকান, পাড়ার লাইব্রেরি, বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসেবেও ‘দেবদাস’ এগিয়ে আছে। প্রশ্নটি উঠতেই পারে, শতবর্ষ ধরে এগিয়ে থাকার এই বুনিয়াদটা কী বা কোথায়? আলোচনাটা সে ক্ষেত্রে শুরু থেকেই শুরু করা যাক। বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম সেরা দুটি উপন্যাসের শুরু লাইনটা আপনাদের জন্য উল্লেখ করতে পারি : The sun shone, having no alternative, on the nothing new. —Samuel Beckett, Murphy (1938) It was a bright cold day in April, and the clocks were striking thirteen. — George Orwell, 1984 (1949) প্রথম উপন্যাসটি নোবেল বিজয়ী আইরিশ লেখক, নাট্যকার স্যামুয়েল বেকেটের লেখা। দ্বিতীয়টি এনিমেল ফার্ম খ্যাত ব্রিটিশ লেখক জর্জ অরওয়েলের লেখা। বেকেট তার প্রথম উপন্যাস শুরু করেছেন কোনো বিকল্প ছাড়াই, কোনো নতুনত্ব ছাড়ায়ই সূর্যোদয়ের কথা বলে। আর অরওয়েল তার উপন্যাস শুরু করেছেন এপ্রিলের উজ্জ্বল কিন্তু ঠাÐা দিনের কথা বলে, যখন ঘড়িতে তেরোটা বাজছে। লক্ষণীয় দুটো উপন্যাসের সূচনাই হয়েছে প্রহরের হিসাব দিয়ে। সময়কালকে সূচিত করে বিশ্বসাহিত্যে উপন্যাস সূচনার উদাহরণ আরো আছে। তবে এবার আমরা শরৎচন্দ্রের ‘দেবদাস’ উপন্যাসের সূচনা বাক্যটি লক্ষ করতে পারি, ‘একদিন বৈশাখের দ্বিপ্রহরে রৌদ্রেরও অন্ত ছিল না, উত্তাপেরও সীমা ছিল না।’ এই বাক্যটি কেবল আবহাওয়ার খবরই দেয় না, বরং বৈশাখের দুপুরের তীব্র রোদ ও উত্তাপের তেজ তুলে ধরে। সেই সঙ্গে দেবদাস চরিত্রের উত্তাপ ও তীব্রতার ইঙ্গিতও যেন তুলে ধরা হয়। উল্লেখ্য, প্রথম অনুচ্ছেদটি পড়লেই আমরা শরৎচন্দ্রের রচনা শক্তি অনুধাবন করতে পারি। একটি উপন্যাসের প্রথম বাক্যটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বসাহিত্যের অধিকাংশ সেরা উপন্যাসের প্রথম বাক্যটিও সেরা। লক্ষণীয়, ১৯১৭ সালের ‘দেবদাস’ উপন্যাসের সূচনাবাক্যের সঙ্গে পরবর্তীকালের বিশ্বসাহিত্যের সেরা দুটি উপন্যাস ‘মার্ফি’ ও ‘নাইনটিন এইটি ফোর’-এর সূচনাবাক্যের গঠনগত কিংবা ভাবগত মিল রয়েছে। বিষয়বস্তুর দিক থেকেও ‘দেবদাস’ আলোচনার দাবি রাখে। প্রথমত এটি বিয়োগান্ত (ট্র্যাজিক) উপন্যাস। বিশ্বসাহিত্যে এবং বিশেষত চিরায়ত বা ধ্রæপদি সাহিত্যে বিয়োগান্ত কাহিনিগুলো যেন জনপ্রিয়তা কিংবা গ্রহণযোগ্যতার বিবেচনায় এগিয়ে আছে। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মহাকাব্যগুলোর মধ্যে বীর রস আর করুণ রসের প্রাধান্য। ‘ইলিয়াড’, ‘অডেসি’, ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’ থেকে ‘মেঘনাদবধ’ পর্যন্ত বীরত্বগাথা আর বেদনারই ছড়াছড়ি। ধ্রæপদি গ্রিক নাটক থেকে শুরু করে ইয়েটস, এলিয়ট, এমনকি ইবসেনেও এই বেদনা ও বিয়োগ মহিমান্বিত হয়েছে। এর কারণটি অবশ্য আমরা অ্যারিস্টটলের ‘পোয়েটিকস’-এ পেয়ে যাই। বিয়োগান্ত কাহিনি পড়তে গেলে আমাদের ভাব বিমোক্ষ (ক্যাথারসিস) হয়। সোজা করে বললে, আমাদের সবার মধ্যে বেদনা ও বিষাদ জমে, ফোড়া গালিয়ে দিলে যেমন জমে থাকা পুঁজ বেরিয়ে যায়, আরাম লাগে, শস্তি পাওয়া যায়Ñঅ্যারিস্টটলের ক্যাথারসিস তত্ত¡ মতে, তেমনই বিয়োগান্ত কাহিনি পড়ে, শুনে, দেখে আমাদের ভেতরের জমাট বিষাদ-বেদনা বেরিয়ে আসে, আমরা আরাম পাই। ‘দেবদাস’ তেমনই এক বেদনা ও বিয়োগের গল্প যার সঙ্গে আমরা অনেকেই যুক্ত হতে পারি, কেননা আমাদের অধিকাংশের জীবনেই ব্যর্থ প্রেমের গল্প আছে। বিশ্বসাহিত্যে প্রেমের গল্পের অবস্থানটাও প্রাচীন। হেলেন-প্যারিস, রাধা-কৃষ্ণের প্রাচীন কিংবা পৌরাণিক প্রেমকাহিনি অবলম্বনে কত গল্প-উপন্যাস-নাটক রচিত হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। তবে দেবদাসের সঙ্গে অন্তত শেকসপিয়রের দুটি নাটকের তুলনামূলক আলোচনা হতে পারে, ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ এবং ‘হ্যামলেট’। পরিণতির দিক থেকে রোমিও-জুলিয়েট এবং হ্যামলেট-ওফেলিয়ার সঙ্গে দেবদাস-পাবর্তীর অমিল আছে। কেননা শেকসপিয়রের কাহিনিদ্বয়ে নায়ক-নায়িকা উভয়েরই মৃত্যু হয়। দেবদাসের পাবর্তী কিংবা চন্দ্রমুখীর মৃত্যু হয় না, তারা বেঁচে থাকে, বেদনা নিয়ে। অন্যদিকে ‘হ্যামলেট’ এবং ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’-এ ত্রিভুজ প্রেম নেই, দেবদাসে আছে। তুলনায় হ্যামলেটের সঙ্গে দেবদাসের চারিত্রিক মিল লক্ষণীয়। হ্যামলেটের যে দ্বিধা ‘টু বি অর নট টু বি’ তা প্রায়ই দেবদাসে লক্ষণীয়। অন্যদিকে তরুণ রোমিওর মতো দেবদাসও মূলত একজন প্রেমিক। রোমিও জুলিয়েটে যে পারিবারিক লড়াই-দ্ব›দ্ব দেখি দেবদাসে সেটি প্রকট না-হলেও দেবদাস ও পাবর্তীর মিলনের মাঝখানে পরিবার তথা সামাজিক ও ধর্মীয় জাত-পাত প্রাথমিক অন্তরায় হয়ে ওঠে। কাপ্যুটে ও মন্টিগো পরিবারের ঝগড়াটা অনেককালের, বিবাদরত এ দুই পরিবারের রোমিও আর জুলিয়েটের মধ্যে প্রেম হয়, অন্যদিকে জমিদার নারায়ণ মুখুয্যের পরিবারের সঙ্গে বেচাকেনা চক্রবর্তী পরিবারের কোনো ঝগড়াই ছিল না, বরং এই দুই পরিবারের ছেলে-মেয়ে পাশাপাশি ছেলেবেলা থেকেই একসাথে বেড়ে ওঠে। কিন্তু তাদের বিয়ের প্রসঙ্গ আসার সঙ্গে সঙ্গেই জাত-পাতের প্রশ্ন ওঠে। ব্যক্তি দেবদাসের আত্মপীড়ন, মদে ডুবে থাকা, প্রতি মুহূর্তে ভুল সিদ্ধান্ত আর দ্বিধা-দ্ব›েদ্বর দোলাচল এ উপন্যাসকে শেকসপিয়রীয় ট্র্যাজেডির অনুভ‚তি দেয়।

Title : দেবদাস শতবর্ষ পেরিয়ে
Author : মুম রহমান
Publisher : ক্রিয়েটিভ ঢাকা পাবলিকেশন্স
ISBN : 9789848071328
Edition : 2nd Published, 2020
Number of Pages : 184
Country : Bangladesh
Language : Bengali

মুম রহমান। পুরাে নাম মুহম্মদ মজিবুর রহমান। জন্ম ২৭ মার্চ, ১৯৭১ সাল। বাবা : মাে. মুসলেহ উদ্দিন। মা : তাহেরুন্নেসা। দেশে এবং দেশের বাইরে উল্লেখযােগ্য পত্র-পত্রিকায় অসংখ্য গল্প-উপন্যাস-নাটক-প্রবন্ধ-অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি ব্যস্ত টিভি নাটক আর বিজ্ঞাপনের স্ক্রিপ্ট নিয়ে। প্রথম রচিত ও অভিনীত টিভি নাটক এক চিলতে আকাশ ১৯৮৮ সালে বিটিভিতে প্রচারিত । কাজ করেছেন মঞ্চ ও বেতারে। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে নাট্য রচনায় এমএ । পত্র-পত্রিকা ও বিজ্ঞাপনী সংস্থায়ও কর্মরত ছিলেন । বর্তমানে ইংরেজি মাধ্যমের এক স্কুলে নাট্যশিক্ষক হিসাবে কর্মরত। সাকিরা পারভীনকে নিয়ে তৈরি করেছেন আর্ট জোন নামের সংস্থা; যেখানে নাট্যরচনা, আবৃত্তি, বনসাই তৈরির মতাে বিষয়ে ভিন্ন ধারার প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করেন তিনি।


If you found any incorrect information please report us


Reviews and Ratings
How to write a good review


[1]
[2]
[3]
[4]
[5]