দুখু বাঙাল

দুখু বাঙাল

দুখু বাঙাল (৩০ জুন ১৯৫৭) সত্তর দশকের একজন বাংলাদেশী কবি। তার জন্ম ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে অবিভক্ত বরিশাল জেলার বাউফল থানাধীন ছোট ডালিমা গ্রামে; যা বর্তমান পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত। মা আছিয়া খাতুন, বাবা আবদুর রশিদ হাওলাদার। পিতৃপ্রদত্ত নাম মুহম্মদ ইছহাক। দাদির আদুরে নাম দুখু। লেখক ন ামেই অধিক পরিচিত। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া গ্রামের স্কুল- নাজিরপুর-ছোট ডালিমা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ১৯৬৯-এর ফেব্রুয়ারি, এইটে পড়াকালীন আশপাশের ধর্মভীরু লোকদের প্রবল বিরোধিতার মুখে কতিপয় সহপাঠী ও বন্ধুদের নিয়ে তার নেতৃত্বে এক রাতের মধ্যে স্কুলমাঠে গড়ে উঠে শহিদ মিনার। এই ঘটনার জের ধরে ঘটে তার স্কুলবদল- ভর্তি হন বাউফল হাইস্কুলে। স্বাধীনতা যুদ্ধের এই কিশোরযোদ্ধা ১৯৭২ এ (দ্বিতীয় ব্যাচ) বাউফল হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৪ এ বাউফল কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৭৬ সনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বাউফল সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রিলাভ করেন। স্কুলজীবন থেকেই ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত, ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা। একাত্তরের মে মাসে বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি অসুস্থ বাবাকে দেখতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটক হন। ১৯৭৪-এর এপ্রিলে সরকারের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলাকালে স্বাধীন দেশের সেনাবাহিনীর হাতে দ্বিতীয়বার বাউফল থেকে আটক হন। ১৯৭৫-এর অক্টোবরের শেষ দিকে বাউফলে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে দেয়াল লিখনের সময় তিনিসহ চার বন্ধু পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ছাড়া পান আটককারী পুলিশ কর্মচারীর উদারতার কারণে। ১৯৮১ সনে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে সরকারি চাকরিতে যোগদান। ১৯৮৭ সালে পদোন্নতি। কর্মক্ষেত্রে ২৪ জানুয়ারি ১৯৮৮ লালদিঘির ময়দানে বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোটের পূর্বঘোষিত জনসভা পুলিশ কর্তৃক ভণ্ডুল করে দেওয়া এবং একই সময়ে সংঘটিত গণহত্যা চলার প্রাক্কালে সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড়ে এক কনস্টেবল তাঁর রাইফেল শেখ হাসিনার দিকে তাক করে তাঁকে গুলি করতে উদ্যত হলে কোতোয়ালী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক কাজী শাহাবুদ্দিন আহম্মদ ও আমি (পরিদর্শক মুহম্মদ ইছহাক দুখু, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, চান্দগাঁও থানা) বিদ্যুৎ দ্বেগে তাঁর রাইফেলের নলটি ও তাঁকে ধাক্কা দিয়ে পেছনের দিকে সরিয়ে দিই। এভাবেই সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে যান। এই দিনের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে মহিউদ্দিন শামীমসহ ২৪ জন শহিদ হন; যা চট্টগ্রাম গণহত্যা নামে পরিচিতি লাভ করে। বিচারে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদাসহ ৮ জনের ফাঁসির আদেশ হয়। ২০০৮-এর জুনে মাগুরা জেলায় কর্মরত থাকাকালীন বিভাগীয় এক বৈঠকে ক্রসফায়ার ও কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে বক্তব্য রাখার জের ধরে চাকরি ছেড়ে স্বেচ্ছাঅবসরগ্রহণ। ভিন্ন স্বাদ ও মাত্রার দাবিদার এই কবির ছেলেবেলা থেকে বিভিন্ন পত্রিকার ছোটদের আসর ও শিশুতোষ পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। গ্রন্থতালিকা কবিতা ▪ নির্বাচিত নির্বাসন (১৯৮৬) ▪ নির্জন পাথর (১৯৯৪) ▪ কাছে আসি দূরে যাই (২০০১) ▪ সমুদ্র সান্নিধ্যে মন (২০১১) ▪ যে পাতে জনমলোহু (২০১৫) ▪ সোনার কবজ (২০১৮) ▪ হরিজন শব্দাবলি (২০১৮) ▪ নির্বাচিত কবিতা (২০১৯) ▪ শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০২০) ছড়া ▪ পায়রা নদীর পট (২০১৫) ▪ একাত্তর ও সপ্তম নৌবহর (২০১৬) ▪ ছড়া সংগ্রহ (২০২১) গদ্য ▪ আবুলকান্দাঢেউ (২০২৩, আত্মজৈবনিক গ্রন্থ) সম্পাদনা ▪ দীর্ঘ কবিতায় পিতা তুমি (মুজিববর্ষ-২০২০) পুরস্কার ও সম্মাননা ❖ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংগঠন ‘একাল’ জীবননগর কর্তৃক সংবর্ধনা (১৯৯৫) ❖ মোরেলগঞ্জ নাগরিক কমিটি কর্তৃক গণসংবর্ধনা (১৯৯৭) ❖ বাগেরহাট প্রেসক্লাব কর্তৃক সংবর্ধনা (২০০৩) ❖ জীবননগর সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক সম্মাননা পুরস্কার (২০১১) ❖ জেলা প্রশাসন সাতক্ষীরা কর্তৃক জীবনানন্দ সম্মাননা স্মারক (২০১২) ❖ স্বাধীনতা সংসদ ঢাকা কর্তৃক কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিপদক (২০১২) ❖ কবিতালাপ পুরস্কার ২০১১ (২০১২) ❖ মাইকেল মধুসূদন শুভেচ্ছা সম্মাননা (২০১৩) ❖ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মবার্ষিকী ১৪২২ উপলক্ষে রূপসা উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক সম্মাননা স্মারক (২০১৫) ❖ কবিতা পরিষদ সাতক্ষীরা কর্তৃক কবিসম্মাননা (২০১৭) ❖ কাজী ইমদাদুল হক সম্মাননা (২০২০) ❖ বাঙালি সাহিত্য সম্মাননা (২০২৩)সহ অনেক।

দুখু বাঙাল এর বই সমূহ

Showing 1 to 1 of 1

View

Sort icon