এনায়েতুল্লাহ আল্‌তামাশ

এনায়েতুল্লাহ আল্‌তামাশ

এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ এনায়েতুল্লাহ আলতামাশের জন্ম ১৯২০ সালের পহেলা নভেম্বর। জন্মস্থান পাঞ্জাবের গুজারখান। ১৯৩৬ সালে মেট্রিক পাশ করেই তৎকালীন ভারতের ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে চাকুরি নেন। চাকুরির সুবাদে বার্মা যান জাপানের বিরুদ্ধে লড়তে। ১৯৪৪ সালে জাপানীদের হাতে বন্দী হয়ে যান। কিন্তু বন্দীশালা থেকে পালাতে সক্ষম হন। এরপর বার্মার জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান দুই বছর। পরে ফিরে আসেন নিজ দেশে। আবার ঢােকেন সেনাবাহিনীতে। চলে যান মালেশিয়ায়। মালেশিয়ানদের স্বাধীনতার স্পৃহা দেখে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর চাকুরি ছেড়ে দেন এবং স্বাধীনতাকামীদের দলে যােগদান করেন। ইংরেজরা ভারতের স্বাধীনতা ঘােষণা করলে তিনি ১৯৪৮ ‘এ দেশে ফিরে আসেন এবং পাকিস্তান এয়ারফোর্সে ভর্তি হন। বিমানবাহিনীর চাকুরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি হাতে কলম ধারণ করেন এবং মাসিক সাইয়ারা ডাইজেস্টে যুদ্ধ সংক্রান্ত কাহিনী লিখতে শুরু করেন। কিছু দিনের মধ্যে তিনি এই পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন কাহিনী লিখে তিনি রাতারাতি বিশ্বজোড়া খ্যাতি লাভ করেন। বিশেষত ১৯৬৫ এর সময়ে যুদ্ধ সংক্রান্ত কয়েকটি বই লিখে খ্যাতির চূড়ায় আরােহন করেন। এরপর প্রতিষ্ঠা করেন মাসিক হেকায়েত। তার দক্ষ সম্পাদনায় এই মাসিক পত্রটি ৭০ ও ৮০ এর দশকে উর্দু ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রে পরিণত হয়। নিজের নাম ছাড়াও বিভিন্ন ছদ্ম নামে এনায়েতুল্লাহ সংবাদপত্রে লিখতেন। যেমন, আলতামাশ, ওয়াক্কাস, মাহদী খা, গুমনাম খাতুন, মিম আলিফ, আহমাদ ইয়ারখান, সাবের হােসাইন রাজপুত ইত্যাদি। ঐতিহাসিক উপন্যাস, যুদ্ধকাহিনী, আত্মকাহিনী ইত্যাদি ছিল এনায়েতুল্লাহর প্রিয় বিষয়বস্তু। তাঁর রচিত গ্রন্থাবলির সংখ্যা প্রায় ১০০। ১৯৯৯ সালের ১৬ নভেম্বর উর্দু ভাষার এই সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সম্পাদক ও ঔপন্যাসিক মৃত্যুবরণ করেন। লাহােরে তাকে দাফন করা হয়।