হারানো বিজ্ঞপ্তি (হার্ডকভার)
হারানো বিজ্ঞপ্তি (হার্ডকভার)
৳ ২৫০   ৳ ১৮৮
২৫% ছাড়
Quantity  

৬৯৯ টাকার বেশি বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি

Home Delivery
Across The Country
Cash on Delivery
After Receive
Fast Delivery
Any Where
Happy Return
Quality Ensured
Call Center
We Are Here

মিয়া ভাই পাঁচশত টেহা ধার দেন,পরশু দিতাছি। আমি মকবুল ভাইয়ের দিকে না তাকিয়েই বললাম,‘নিয়ে যান মানি ব্যাগ থেকে। উনি পাঁচশো টাকার সাথে আরও একশো টাকা বাড়তি নিলেন আর একাই বলে গেলো,‘রাস্তা ঘাটের ব্যাপার স্যাপার ভাইসাব,পাঁচশত টেহা ভাংতি করা আর কাউকে মাথায় বাড়ি দেয়া একই কথা। তাই আরও একশত খুচরা লইয়া গেলাম। পরশু একবারে গুইনা গুইনা ছয়শো টেহাই ফেরত পাইবেন।’ আমি হ্যাঁ বা না কিছুই বলিনি। এই ছয়শো টাকা আমি ফেরত পাবো না। এমন অনেক টাকা উনি নিয়েছেন, কিন্তু ফেরত দেয়নি। দিবেও না। মকবুল ভাই বয়সে আমার কম করে হলেও সাত বছরের বড় হবে। কিন্তু উনি আমাকে মিয়া ভাই বলে সম্বোধন করে।কেনো করে জানিনা,আমি কখনো জিজ্ঞাসাও করিনি। চাকরি চেঞ্জ করেছি। আগের অফিস ছিলো উত্তরায়। সেই সুবাধে বাসাও উত্তরা ছিলো। নতুন অফিস ধানমন্ডি। সকাল বিকালের রাস্তায় উত্তরা টু ধানমন্ডি,ধানমন্ডি টু উত্তরা এক বিভীষিকার নাম। আমি ঘুম কাতুরে মানুষ। রাতে ঘুমাই দেরি করে,সকালে ঘুম ভাঙতে চায়না। মাঝে মধ্যে ঘুম ভাঙলে দেখি অফিস টাইম এক ঘন্টা পার হয়ে দ্বিতীয় ঘন্টার শুরু হয়।যে অফিসে চাকরি করি সে অফিসের বস আমি হলে,আমার মতো কোন এমপ্লিয়ি পেলে অবশ্যই দুটো চড় মেরে বের করে দিতাম। ভাগ্যগুণে তা হয়নি। কারন অফিসের বস সম্পর্কে আমার খালু। একচুয়ালি আমার না, অর্পণার খালু। আদর্শ প্রেমিক পুরুষেরা প্রেমিকার মা’কে মা ডাকে, বাবা কে বাবা ডাকে। আঙ্কেল আন্টি ডাকেনা। আমি আদর্শ প্রেমিক। তাই প্রেমিকার খালুকে খালুই ডাকি। অফিসেও। এ নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি নেই। খালু খুব খুশী হয়। মাঝেমধ্যে খালুজান ডাকি। এটা অবশ্য আমার তেলবাজি। অফিসে আমি প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হলেও বাস্তবে আমি খালুজানের ফ্যামিলি অর্ডিনেটর। যেমন, আমাকে এখনি বের হতে হবে। খালুজানের একমাত্র ছেলের বউ সন্তান সম্ভাবা। খুশীর মিষ্টি বিতরণ হবে। মিষ্টি বিতরণের দায় দায়িত্ব আমার। অর্পণা আমার অপেক্ষায় আছে। আজ শুক্রবার। শুক্রবারের শহর হয় মায়েদের আঁচলে রাখা চাবির ঝুলির মতো। প্রয়োজন ছাড়া বের হয়না, যত্রতত্র পরে থাকে না। মনে হয় ঝামেলাগুলো ঝুলে থাকে কোথাও। ছাড়া পায়না। তেমন কোলাহল নেই,অযথা গাড়ি নেই। মানুষেরও ভীড় নেই। এই রেশ চলে বেশ বেলা অব্দি। অবশ্য এ কথাগুলো এখনকার শুক্রবারের সাথে তেমন যায়না। এখন শহরের মাথা সব বারেই গরম থাকে। একমাত্র শুক্রবারের সকাল কিছুটা ঠান্ডা থাকে। গায়ে ঠান্ডা ভাব নিয়ে কাওরান বাজার এসেছি। ময়নার সঙ্গে দেখা করতে হবে। শুনেছি ময়নার মন খারাপ। তার সহযোদ্ধাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। উপায় বুদ্ধি পাচ্ছেনা কি করবে। ওইদিকে মকবুল ভাইও নাকি ফোন ধরছে না। ময়নার কাধে হাত রেখে বললাম- চিন্তা করিস না। খালুজানকে বলে তোর বন্ধুকে ছাড়িয়ে আনবো। আমার সাথে চল। ময়না যাবেনা। বসেই আছে। ময়না হলো কাওরান বাজার চোর কমিটির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। হিচকা টানে মানুষের ফোন, মানিব্যাগ এসব কেড়ে নেয়। তারপর সেগুলো সর্দারের কাছে জমা দেয়। সর্দার সেখান থেকে তাদের পার্সেন্টেজ দেয়। সেই সর্দার হলো আমার রুমমেট মকবুল ভাই। মকবুল ভাইয়ের এই শহরে অনেক ব্যবসা। তবে এই চোরাই চক্রের সর্দারি সম্পর্কে জানতে পারি যেদিন আমার মানিব্যাগ হারানো যায়, এই কাওরান বাজারেই। সারাদিন হতাশা শেষে বাসায় ফিরার পর মকবুল ভাই একটা মানিব্যাগ দেয় আমার হাতে। আমার মানিব্যাগ। দিতে দিতে বলে- মানিব্যাগে আপনার ছবি দেইখা অবাক হইছি। ভাবছি এই মানি ব্যাগে হাত দেওন যাইবো না, দেহেন সব ঠিকঠাক আছে কিনা। তারপর থেকে ময়না এবং তার গ্যাংদের সাথে আমার পরিচয়। কিভাবে তারা এসব করে, কেনো করে এবং মকবুল ভাই কেনো তাদের সর্দার। মকবুল ভাইয়ের সব ব্যবসার মধ্যে যেটা আমায় বেশী অবাক করেছে সেটা হলো ফ্ল্যাট বাসা ব্যবসা। এই শহরে তার অনেক গুলো ফ্ল্যাট। উনি বিশেষ করে ওইসব ফ্ল্যাটগুলো নেয় যেখানে ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া যায়। মালিক পক্ষ থেকে ভাড়া নিয়ে টু- লেট বিজ্ঞপ্তি দেয়, তারপর সিট হিসেবে ভাড়া দেয় ব্যাচেলরদের কাছে। এই ব্যবসার খবর শুনেছি আমার কলিগের কাছ থেকে। যিনি কিনা মকবুল ভাইয়ের খালাতো ভাই টাইপ কিছু একজন। আমার কলিগ-ই আমাকে মকবুল ভাইয়ের সাথে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলো। ময়না যেতে না চাইলেও জোর করে নিয়ে আসলাম। ওর আরো কয়েকজন সদস্য আছে। তাদেরকেও খবর দিয়ে নিলাম। খালুকে ফোন দিলাম মিষ্টি কি সব জিলাপি হবে? ‘খালু ধমক দিলো। এসব আমাকে কেনো জিজ্ঞাসা করো? তুমি তোমার মতো করে সব করো।  আমি আমতা-আমতা করে বললাম খালু একটা বিশেষ প্রয়োজনে ফোন দিয়েছি। খালু শোনার আগেই ফোন কেটে দিলো। তিন মন মিষ্টি কিনেছি মিষ্টি বলতে জিলাপি। অর্ডার করা ছিলো। ধানমন্ডি ৯/এ থেকে ৪/এ পর্যন্ত যতোগুলো মসজিদ পেয়েছি সব মসজিদে ভাগাভাগি করে ময়না এবং ওর যতো সহযোগি আছে ওদের দাঁড় করে দিয়ে এসেছি। জুম্মা শেষে বিতরণ করবে। সব কাজ হলে আমি, অর্পণা আর ময়নার গ্যাং সহো একসাথে দুপুরে খাবো। ঝামেলা যেটা হলো অর্পণাকে ফোনে পাচ্ছি না। মেয়েটা আমাকে কাজে রেখে হুটহাট এদিক সেদিক চলে যায়,খুঁজে পাই না। শেষ যখন খোঁজ হলো তখন অর্পণা খালুদের বাসায়। বললো,‘ময়নাদের নিয়ে চলে আসো। আমি এখানে রান্না করছি।’

Title : হারানো বিজ্ঞপ্তি
Author : সজিব সিকদার
Publisher : হরকরা প্রকাশন
ISBN : 654769142354314
Edition : 1st Edition, 2023
Number of Pages : 72
Country : Bangladesh
Language : Bengali

If you found any incorrect information please report us


Reviews and Ratings
How to write a good review


[1]
[2]
[3]
[4]
[5]


নতুন নতুন অফার সম্পর্কে সবার আগে জানতে সাবস্ক্রাইব করুন
 
 
নতুন নতুন অফার সম্পর্কে সবার আগে জানতে সাবস্ক্রাইব করুন
 
 



Stay Connected   

Make payments via