তুমি বিহীন (হার্ডকভার)
তুমি বিহীন (হার্ডকভার)
৳ ৭৫০   ৳ ৫৬৩
২৫% ছাড়
Quantity  

৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY

প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়;  ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER

Home Delivery
Across The Country
Cash on Delivery
After Receive
Fast Delivery
Any Where
Happy Return
Quality Ensured
Call Center
We Are Here

ইয়াদের নজর এখন আশে পাশে সেই অজানা মেয়েটিকে খুঁজে চলেছে। কেনো যেনো কিছু একটা টান অনুভব করলো সে ঐ মেয়ের প্রতি। একটু পরে সে দেখলো একটা ছোট মেয়ে বালতিতে করে কিছু একটা বিক্রি করছে। মেয়েটাকে দেখে ইয়াদের বড্ড মায়া লাগলো।ছোট্ট মেয়েটির গায়ে পড়নে আছে একটা লাল রঙের ফ্রক। ফ্রকের নিচ দিয়ে সম্পূর্ণ ছিড়ে যাওয়া এবং এটি বর্তমানে মাটির সাথে লেগে আছে। ইয়াদ মেয়েটিকে দেখে তার দিকে এগিয়ে গেলো। ইয়াদকে দেখে মেয়েটি সুন্দর করে হেসে উঠলো...

"ভাইয়া,আপনি কি একটা মালা নিবেন? আমি মাত্রই বাসা থেকে এইখানে এসেছি।"

ইয়াদ মেয়েটির কাছে হাঁটু গেড়ে বসলো...

"মালা! কয়েকটা দেখাও দেখি।"

মেয়েটি মুচকি হেসে দু তিনটি মালা ইয়াদের দিকে এগিয়ে দিলো।

"এগুলো আমার মা বানিয়েছে। আপনার বউয়ের জন্যে নিতে পারেন এগুলো।"

মেয়েটির কথায় ইয়াদ শরীর দুলিয়ে হাসলো।আর মালা গুলো হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো।

"বউ তো নেই,তবে মা এবং বোন আছে।আমার মা আর বোন এইসব অলংকার খুব ভালোবাসে।কতো দাম এর?"

"মাত্র ত্রিশ টাকায় একটি মালা।"

মেয়েটি তার হাত নাড়িয়ে বললো।

ইয়াদ মেয়েটির বালতিতে থাকা অর্ধেক মালা সব কিনে নিলো।আর মেয়েটি তার অন্য হাতে থাকা পলিথিন থেকে একটা খালি প্যাকেট বের করে দিলো।ইয়াদ সে পলিথিনে মালাগুলো পুরে নিলো। মোট টাকার চেয়ে অনেকটা বেশি টাকা ইয়াদ মেয়েটিকে দিলো।অতঃপর,বাচ্চা মেয়েটি হাসতে হাসতে চলে গেলো।ইয়াদ আজ প্রচন্ড খুশি।ইয়াদ তার ইনকাম এর টাকা দিয়ে যতটুক পারে গরীব দুঃখী মানুষের সাহায্য করে।আজ এই বাচ্চাটাকে সাহায্য করে ইয়াদের মনে খুশির ঢেউ বয়ে গেলো।ইয়াদ আর তার বন্ধুদের দিকে যায়নি।কাছে থাকা একটি ফাঁকা সিটে সে গা এলিয়ে দিলো।আর তার প্রিয় সিগারেট বের করে সেটি ফুঁকতে ফুঁকতে এই শান্ত নিরিবিলি সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ উপভোগ করছে।

বেলা বারোটার দিকে আমরা সবাই মাহির বাসার দিকে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলাম।হঠাৎ দূর থেকে দেখতে পেলাম গোলাপি রঙের হাওয়াই মিঠাই। হাওয়াই মিঠায় অনেকদিন খাওয়া হয়নি আমার। তাই নিমিষেই এটি খাওয়ার জন্যে আমার লোভ শতগুণে বেড়ে গেল। বাকিদের রেখে আমি সেদিকেই খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি।আমার দৌড়ের সাথে পাল্লা দিতে না পেরে বাকি সবাই এক সাথে "দুআ, দাঁড়া"এই কথাটি বলে চেঁচাতে লাগলো। কিন্তু আমাকে থামায় কে? আমার হাওয়াই মিঠাই চাইই চাই। আমি যত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি, ততই দ্রুত হাওয়াই মিঠাই ওয়ালা চলে যাচ্ছে।হওয়াই মিঠাই ওয়ালার কাছে যাওয়ার জন্য শর্টকাট রাস্তা নিতে গিয়ে আমি উঠে পড়লাম সেই বড় পাথরগুলোর উপর। কিন্তু হঠাৎ পা পিছলে আমি পড়ে গেলাম পাথরের উপরের দিকে। সাথে সাথেই আমার মুখ দিয়ে আর্তনাদ বের হলো "মা!"

হঠাৎ এমন চিৎকার শুনে ইয়াদ তার মাথার পিছন দিকে ঘাড় বাঁকিয়ে ফিরলো। ইয়াদ দেখতে পেলো পাথরের উপর একটি মেয়ে বসে আছে। আর সেই মেয়েটি আজ সকালের সেই এলোকেশী। মেয়েদের সাদা ওরনায় তার পরিচয় অনায়সে দিয়ে দিলো ইয়াদকে। অতিরিক্ত বাতাসের কারণে মেয়েটির মুখ তার চুল এবং ওরনায় ঢেকে আছে।ইয়াদ দ্রুত মেয়েটির দিকে এগিয়ে এলো। মেয়েটি তখনো পায়ে হাত চেপে কুঁকিয়ে উঠছে বারবার।ইয়াদ মেয়েটিকে বলে উঠলো...

"এই মেয়ে,তুমি ঠিক আছো?"

এমন পুরুষালী কণ্ঠ শুনে আমি বড্ড ভয় পেলাম।মাথা উঁচু করে যাকে দেখলাম,তাকে দেখার সাথে সাথে আমার মাথা ঘুরে গেলো।আমার সামনে যে দাঁড়িয়ে আছেন, উনি আর কেউ নন বরং মিস্টার ইয়াদ।কেনো যেনো আমার গাল গুলো জ্বলে উঠলো উনাকে দেখে।এতো বড় মাপের একটা মানুষ আমার সামনে আছেন। এটি আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।আমি আপাতত হা করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।

আর ইয়াদ সে তার সামনে থাকা মেয়েটিকে দেখে এখনো অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। মেয়েটি সামনের দিকে আরো বেশি নজর কাড়া।এই যে মেয়েটির অশ্রু মাখা চোখ,লাল নাক,আর অতি ফর্সা গালের ডান পাশে একটা হালকা দাগ এবং পাতলা দেহের গঠন।এই সামান্যতায় মেয়েটির মুখে যেনো হাজারো মায়া।যে মায়াতে কেটে যেতে পারে যেকেনো বিষাক্ত মনের দাগ বা বদলে যেতে পারে কারো মনের সকল অহংকার।ইয়াদ অবাক চোখে দুআকে দেখে আছে।

আমার এখনো বিস্ময় কেটে উঠছে না।একটু আগেই রহমান আর বাকি দুইজন এসে পৌঁছিয়েছে এইখানে।কিন্তু আমি ইয়াদ সাহেবকে দেখছি বারবার চোখের পলক ফেলে।লোকটি বাস্তবে আরো সুন্দর আর বেশি আকর্ষণীয়।কি সুন্দর তার মুখের নকশা।আর চোখগুলো যেন এক অজানা মায়া দিয়ে তৈরি।আমি উনার দিকে অল্প তাকিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে গেলাম।বড় মাপের মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকার আমার কোনো ইচ্ছে নেই, সে উনি যতই সুন্দর হোক না কেনো!

আবারো ইয়াদ সাহেব আমাকে প্রশ্ন করলেন...

"তুমি ঠিক আছো?"

আমি পা থেকে হাত সরিয়ে দেখলাম রক্ত বের হয়ে গিয়েছে।আমি রক্ত দেখে অল্প ফুঁপিয়ে উঠলাম।

"আরে আরে,রক্ত বের হচ্ছে।পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঐ ক্ষত স্থান চেপে ধরো।"

ইয়াদ সাহেবের কথায় মাহি তার ব্যাগে থাকা রুমাল আমার দিকে এগিয়ে দিলো।

"এই নে দুআ।এটা নিয়ে আপাতত ক্ষতস্থান চেপে ধর।"

দুআর নাম শুনে ইয়াদের মনে কেনো যেনো একটু কেঁপে উঠলো।কিন্তু কেনো এমন হলো জানা নেই ইয়াদের।এই নামের একজনকে ইয়াদ চিনে।তবে,তার চেহারা কখনোই দেখেনি সে।ইয়াদ বেশি অবাক হলো বাকি সবার কান্ড দেখে। ইয়াদকে দেখে সবাই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে,কিন্তু এইখানে তার সাথে এমন কিছুই ঘটছে না।সবাই এই দুআ নামক মেয়েটার জন্যে চিন্তিত।এই বিষয়টা কেনো যেনো ইয়াদকে খুবই আকর্ষন করেছে।আর এখন দুআ মেয়েটি অল্প হাতে তার পায়ে রুমাল দিয়ে চেপে ধরছে আর সাথে সাথে তার চোখ মুখ কুঁচকে কেমন যেনো একটা মুখ বানাচ্ছে।ইয়াদ খুব উপভোগ করছিলো দুআর এমন মুখ বানানো।

Title : তুমি বিহীন
Author : সালসাবিল সারা
Publisher : গ্রন্থরাজ্য
Edition : 1st Published, 2025
Country : Bangladesh
Language : Bengali

If you found any incorrect information please report us


Reviews and Ratings
How to write a good review


[1]
[2]
[3]
[4]
[5]