মহাবুভুক্ষা (হার্ডকভার)

ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার যােহান বােয়ার উনিশ শতকের শেষার্ধ থেকে বিশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত নরওয়ের সাহিত্যে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছিলেন। প্রথম প্রকাশিত রচনা একটি নাটক- 'জননী'। এই নাটক লিখে তিনি একটি বৃত্তি পান। পরে ইংল্যাণ্ড, ফ্রান্স ও জার্মানিতে লেখাপড়া শিখেছিলেন। ১৯০१ সালে ফিরে আসেন স্বদেশে। তাঁর প্রথম উপন্যাস 'হেলগা (১৮৯৫) খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সমকালীন নরওয়ের সমাজ জীবনের বিচিত্র সমস্যাকে তিনি সার্থকভাবে হেলগা-য় ফুটিয়ে তুলেছিলেন। এ-গ্রন্থের মাধ্যমেই তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। নরওয়ের সামাজিক, রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে বােয়ারের সাহিত্যিক জীবনের উত্থান পতনের গভীর সম্পর্ক আছে। হেলগাতে তিনিই প্রথম ইতিবাচক বক্তব্যের ভিত্তিতে নরওয়েজীয় উপন্যাসকে দাঁড় করালেন। তার প্রভাব পড়েছে আপদালের সুবৃহৎ দশ খণ্ডের উপন্যাসে (রচনাকাল ১৯১১-২৪)। ভবঘুরে উচ্ছু ্খল চরিত্রের সমাবেশ চেতনাসম্পন্ন শ্রমিকচরিত্র পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত। রুশ বিপ্লব সম্পন্ন হবার পরে যে কজন নরওয়েজীয় লেখক সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদের চিন্তায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন, থেকে সামাজিক যােহান বােয়ার তাঁদের মধ্যে প্রধান। ন্যুট হামসুনের প্রভাব নরওয়ের তরুণ সাহিত্যিকদের কিছুকাল আবিষ্ট করে রেখেছিল। বােয়ার যেন তার প্রতিক্রিয়া। তিনি তরুণদের কাছে তুলে ধরলেন সামাজিক বাস্তবতার অংশ। লেখক তাঁর সমকালের দ্বন্দবকে ফোটালেন তাঁর কলমে। এ বিষয়ে তাঁর এমিগ্রান্ট উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ১৯২৩ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন- লক্ষ্য এই উপন্যাসের উপাদান সংগ্রহ নরওয়ে থেকে যারা প্রাচ্যে বসতি গড়েছেন-তাদের জীবনকথা। সাহিত্যচর্চায় বােয়ার একাধিকবার পথ বদলেছেন, অথবা বলা যায়, সারাজীবন তিনি পথ সন্ধান করেছেন।