৳ ৭০০ ৳ ৫৯৫
|
১৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
একমাত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বাদ দিলে আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল ভাষা আন্দোলন। একে বলা হয় আমাদের আত্মআবিস্কার বা স্বরূপ-অন্বেষার সূচনালগ্ন। অনেকের মতে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ এই ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই উপ্ত ছিল। ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বা মহত্ব কেবল ১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকায় ছাত্রদের মিছিল-সংগ্রাম ও শহীদদের আত্মদানের ঘটনায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নটি নিয়ে তৎকালীন পূর্ব বাঙলার মানুষ কিংবা তার সচেতন অংশটির মধ্যে ১৯৪৮ কিংবা তারও আগে অর্থাৎ বিভাগপূর্বকালেই চিন্তাভাবনা শুরু হয় একথা যেমন সত্য,তেমনি বা তার চেয়েও বড় সত্য হল, এই আন্দোলনের তাৎপর্য ভাষা বা সাংস্কৃতিক স্বাধিকারের দাবি ছাড়িয়ে জাতীয় স্বাধীনতা ও মেহনতি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াইয়ের মধ্যে তার পরিণতি খুঁজেছিল । আপাতদৃষ্টে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বা নাগরিক সমাজের আন্দোলন বলে মনে হলেও ব্যাপক গণমানুষের ক্ষোভ-প্রতিবাদের জ্বালামুখ হিসেবে কাজ করেছিল সেদিন ভাষা আন্দোলনের ঘটনাটি। ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বিচার কিংবা আমাদের জাতীয় জীবনে তার প্রভাবপ্রতিক্রিয়া বুঝতে হলে সুতরাং আন্দোলনের সামগ্রিক পটভূমি তথা সমকালীন রাজনৈতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটেই তা করতে হবে। আর এই অতি প্রয়ােজনীয় কাজটিই বদরুদ্দীন উমর করেছেন তিন খণ্ডে সমাপ্ত এবং অজস সাক্ষাৎকার, দলিল সমৃদ্ধ তার “পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি গ্রন্থে। আমাদের জানা মতে ভাষা আন্দোলনকে নিয়ে লেখা প্রথম গবেষণামূলক গ্রন্থ এটি। আর কোনাে তর্ক বা প্রতিবাদের আশঙ্কা না করেই বােধহয় বলা যায়, অদ্যাবধি কি তথ্য সমাবেশের কি বিশেষণী ক্ষমতার দিক থেকে এই গ্রন্থটিকে অতিক্রম করার যােগ্যতা আর কারাে হয়নি। কোনাে রকম প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপােষকতা ছাড়া সম্পূর্ণ একক বা ব্যক্তি উদ্যোগে এ ধরনের বিশাল গবেষণাকর্মের উদাহরণ আমাদের দেশে আর দু-একটিও আছে কি না সন্দেহ। ইংরেজিতে যাকে 'মনুমেন্টাল ওয়ার্ক' বলে লেখকের দীর্ঘ শ্রম এবং একনিষ্ঠ ও গভীর গবেষণার ফসল ভাষা আন্দোলনের এই প্রামাণ্য ইতিহাসটি সম্পর্কে। অনায়াসে তা প্রয়োগ করা যায়। ১৯৭০ সালে, অর্থাৎ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঠিক প্রাকলগ্নে, এর প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত হতেই, লেখকের পূর্ববর্তী আরও কয়েকটি পুস্তকের মতোই, তা আমাদের চিন্তা চেতনাকে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। আমাদের সমাজমানসে যার প্রভাব আজও কমবেশি কার্যকর। বদরুদ্দীন উমর নানাদিক থেকেই আমাদের দেশের একজন ব্যতিক্রমী বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধিজীবী কথাটাকে তার প্রকৃত বা সদর্থে বাংলাদেশে যে অল্প কয়েকজন মানুষ সম্পর্কে ব্যবহার করা যায় নিঃসন্দেহে তিনি তাঁদের অন্যতম। তাঁর মত বা দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সহমত না হয়েও একথা স্বীকার করতে কারোই দ্বিধা হবার কথা নয়। সত্যি কথা বলতে কী, তিনি যদি আর কিছু নাও করতেন, শুধু তাঁর ভাষা আন্দোলনের এই ইতিহাস গ্রন্থটির জন্যই আমাদের বুদ্ধি ও মননচর্চার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকতেন। যদিও এছাড়াও আরও অনেক মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ তিনি করেছেন। উমরের মতে ইতিহাস ঘটনার বিবরণ মাত্র নয়, তার ব্যাখ্যাও। ফলে ঘটনাক্রম বর্ণনা বা তথ্য জড়ো করাতেই ইতিহাসকারের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। পণ্ডিত হিসেবেও তিনি ইতিহাসের বস্তুবাদী ব্যাখ্যায় বিশ্বাসী। একজন মার্কসবাদী হিসেবে তিনি মনে করেন কোনোকিছুই আসলে শ্রেণিনিরপেক্ষ নয়। ভাষা আন্দোলন, তার পটভূমি ও সমকালীন সমাজ-রাজনীতি বিচারেও স্বভাবতই তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু এর ফলে ঐতিহাসিক সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা কোথাও ক্ষুন্ন হয়নি। তথ্য সংস্থাপন কিংবা ব্যক্তির ভূমিকার উল্লেখ কোনো ব্যাপারেই তিনি যেমন অতিশয়োক্তি বা আতিশয্যপ্রিয়তার তেমনি খণ্ডদৃষ্টি বা একদেশদর্শিতার পরিচয় দেননি। দীর্ঘদিন ধরে দুষ্প্রাপ্য এই বইটির নতুন ও নির্ভূল সংস্করণ সুবর্ন প্রকাশ করেছে, সেজন্য তাঁদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। সবাইকে শুভেচ্ছা। -- মোরশেদ শফিউল হাসান
Title | : | পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি (তৃতীয় খন্ড) |
Author | : | বদরুদ্দীন উমর |
Publisher | : | সুবর্ণ |
ISBN | : | 9847029700785 |
Edition | : | 2021 |
Number of Pages | : | 432 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
বদরুদ্দীন উমরের জন্ম ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিম বাঙলার বর্ধমান শহরে। মার্কসবাদী তাত্ত্বিক, রাজনীতিবিদ, প্রাবন্ধিক ও ইতিহাসবিদ হিসেবে তিনি বাঙলাদেশে সুপরিচিত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এ. পাশ করার আগেই ১৯৫৪ সালে দর্শন বিভাগে অস্থায়ীভাবে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৫৫ সালে এম. এ. পাশ করার পর ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে এবং ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬১ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি এই তিন বিষয়ে অনার্স ডিগ্ৰী অর্জন করেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগেরও তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা। ষাটের দশকে প্রকাশিত তাঁর তিনটি বই সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৬), সংস্কৃতির সংকট (১৯৬৭) ও সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৯) তত্ত্বকালে বাঙালী জাতীয়তাবাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সময় পাকিস্তান সরকারের সাথে তাঁর বিরোধ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এবং তিনি নিজেই ১৯৬৮ সালে অধ্যাপনার কাজে ইস্তফা দিয়ে সরাসরি রাজনীতি ও সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে নিজেকে নিয়োজিত করেন।
If you found any incorrect information please report us