
৳ ৭০০ ৳ ৫২৫
|
২৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER





শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা
----- আনিসুজ্জামান -----
৭২ বছর পৃর্তি উপলক্ষে শেখ হাসিনাকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে শেখ হাসিনা আমাদের ছাত্রী ছিল। সময়টা তখন ভালাে ছিল না। আগরতলা যড়ন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হয়ে শেখ মুজিবুর রহমান তখন কারাবন্দি। সারাদেশের মানুষ আশা-নিরাশায় দোদুল্যমান। শ্রেণিকক্ষের বাইরে, কলাভবনের করিডরে, তাকে ডেকে তার পিতার কুশল জিজ্ঞাসা করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন রাজনীতি স্তিমিত। ইডেন কলেজের নির্বাচিত ছাত্রীনেত্রীর তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজনৈতিক পরিবেশে সময় কাটছে। তারপর ঝড় উঠল। সেই ঝড়ে অনেকের ঘর তছনছ হয়ে গেল। কিন্তু জয় হলাে জনশক্তির। ষড়যন্ত্ মামলা প্রত্যাহার করা হলাে। শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হলেন। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রষ্টর ড. শামসুজ্জোহা-হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আমরা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা, ধর্মঘট চালিয়ে যাই, ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হয় না। সেই ক্লাস শুরু হলাে সামরিক আইনজারিতে। আমরা নতমনস্তকে ক্লাসে যাওয়া শুরু করলাম। তারপর অবকাশ, তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে আমার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যােগদান। হাসিনার সঙ্গে আর দেখা হয় না। দেখা হলাে অনেক বছর বাদে। স্বজনহারা শেখ হাসিনা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেছে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে, বৃত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার আবাসে একদিন টেলিফোন পেলাম শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে এসেছেন, আজ বিকেলে তিনি আপনার বাসায় যাবেন দেখা করতে। খবর পেলে আমিই দেখা করতে যেতাম তার সঙ্গে। তা নয়, শহর থেকে ১৪ মাইল পেরিয়ে, সে-ই এল আমার বাসায়। মুখােমুখি হতে অশ্রপাত হলাে, সংক্ষেপে শােনা গেল কয়েক বছরের জীবনযাপনের কথা। এমন হৃতসর্বস্ব হয়ে কজন মানুষ ফিরে আসে আপন জায়গায় ? ১৯৮৮ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় আফ্রা-এশীয় গণসংহতি পরিষদের পঞ্চম আন্তর্জাতিক কংগ্রেস। সেখানে শেখ হাসিনা গেছে, আমিও গেছি। যার সঙ্গে সে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়, আমার শিক্ষক' বলতে ভুল করে না। তারপর নদীতে অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনা তিন-তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। শিক্ষকদের প্রতি সে সব সময়েই প্রত্যাশার অতীত শ্রদ্ধা দেখিয়ে এসেছে। আমরা কেউ মঞ্চে না থাকলেও বক্তৃতার সময়ে আমাদের সম্বােধন করেছে। প্রধানমান্ত্রীকে সম্মান দেখাতে আমরা উঠে দাঁড়ালেও কত না সময়ে সে আমাদের বসিয়ে দিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কথা বলেছে। আমার শিক্ষক শুনতে শুনতে শ্রোতারা না জানি কত বিরক্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ অর্জন কী ? একে তাে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপহার: যে-দেশকে মনে করা হতাে একটা বােঝা, সে-দেশ এখন উন্নয়নের আদর্শ। তারপর, আমি বলব, যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করা; সৌদি আরব ও তুরস্কের মতাে দেশের অনুরােধ এবং চাপ অগ্রাহ্য করে-অনেকখানি ঝুঁকি নিয়ে সে এই কাজটা করেছে। আর কেউ তা করতে সাহস পেত কি না সন্দেহ। তেমনি সাহস সে দেখিয়েছে পদ্মাসেতু নির্মাণের বিষয়ে। বিশ্বব্যাংকের মিথ্যে অভিযােগ ও সতি্যি হুমকি অগ্রাহ্য করে নিজেদের অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘােষণা আত্মশক্তিতে শেখ হাসিনার প্রবল আত্মবিশ্বাস এবং জাতি হিসেবে নিজেদের সম্মান উর্ধ্বে তুলে ধরার প্রয়াসের পরিচয় বহন করে। আমরা অনেকেই ভেবেছিলাম, বাংলাদেশের পক্ষে পদ্মাসেতু নির্মাণের জন্য প্রয়ােজনীয় অর্থসংকুলান করা সম্ভবপর হবে না। কিন্ত্ভু তা সম্ভব হচ্ছে এবং এর আনুষঙ্গিক কর্মের দায়িত্ব নিতে অর্থ হাতে নানা দেশ এগিয়ে এসেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অর্জন সামান্য নয়। আমাদের গড় আয় ও আয়ু দুই-ই বেড়েছে। এসবই শেখ হাসিনার দেশপ্রেম ও কর্মনিষ্ঠার পরিচায়ক। স্বল্প সামর্থ্য নিয়ে বিপুলসংখ্যক রােহিঙ্গা শরণার্থীকে যে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে, তা শেখ হাসিনার মানবিক বােধের পরিচয় বহন করে। রাজনীতির ফাঁকে ফাঁকে শেখ হাসিনা লেখালেখিরও সময় করে নিয়েছে। তার প্রথম বইয়ের মুখবন্ধ আমি লিখেছিলাম। তারপর, আনন্দের সঙ্গে লক্ষ করলাম, সে আরও অনেক বই লিখেছে এবং গ্রন্থকাররূপে প্রতিষ্ঠালাভ করেছে। তার সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাত্রা এবং সৌজন্যপূর্ণ শালীন আচরণ অনুকরণীয় হওয়ার যােগ্য। কোমলে-কঠোরে তার যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তা শ্রদ্ধার যােগ্য। পৃথিবীর নানা দেশ থেকে যেসব সম্মান সে লাভ করেছে, তা তার প্রাপ্য। এসব সম্মানে আমরা সকলেই গৌরবান্বিত হয়েছি। আমি তার দীর্ঘ জীবন ও অশেষ কল্যাণ কামনা করি। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলাে যাতে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারে, তাকে সেই দিকে মনােযােগ দিতে হবে। তার ওপরেই নির্ভর করবে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ, শেখ হাসিনার জীবনের সর্বাঙ্গীন সাফল্য।
Title | : | তারুণ্যের আলোয় শেখ হাসিনা |
Author | : | মাজহারুল ইসলাম |
Publisher | : | অন্যপ্রকাশ |
ISBN | : | 9789845025812 |
Edition | : | 2019 |
Number of Pages | : | 359 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
If you found any incorrect information please report us