সাদা কালো (হার্ডকভার)

বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা এক অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্ব পালনে তিনি আজ এক মহান অভিভাবক। হিসেবে প্রতিষ্ঠিত । আন্তর্জাতিকভাবেও তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং শান্তি ও মানবতার সংগ্রাম বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সরকারপ্রধান হিসেবে অথবা বিরােধীদলীয় নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা সর্বদাই গুরুত্ব দিয়েছেন গণতন্ত্র, উন্নয়ন, শান্তি ও মানবতাকে । ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাকে হত্যার জন্য ১৩টি গ্রেনেড ও ১০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল-যখন তিনি সরকারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তৃতা শেষ করেছেন মাত্র । সেদিন তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়। এই শােকাবহ হত্যাকাণ্ড তাঁকে আরও শক্তিশালী করেছে দেশ ও জাতির প্রতি মমত্ববােধে । সেই সঙ্গে দেশে-বিদেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে তার অবস্থান সুদৃঢ় হয়েছে। বাঙালি ও বাংলাদেশের নির্ভরযােগ্য আশ্রয় এখন তাঁর কাছে। সময়ের দাবিতে বিভিন্ন আন্দোলনে দুঃসাহসী নেতৃত্ব দিয়ে তিনি তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন বলেই বাংলাদেশ এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গােপালগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন । ১৯৮১ সালে তাঁকে বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। ২৫ বছর আগে তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক রাজনীতি সংক্রান্ত বই, সাময়িকী ও সাহিত্যের উন্মুখ পাঠক। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ হচ্ছে-বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, দারিদ্র্যদূরীকরণ : কিছু চিন্তাভাবনা, জনগণ ও রাজনীতি, বৃহত্তর জনগােষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন, পিপল এন্ড ডেমােক্রেসী, লিভিং ইন টিয়ারস এবং সহে মানবতার যাতনা । ১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বােস্টন বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে আইনে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। ৪ জুলাই জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁকে আইনে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেয় । ২৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাবারেট ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে দর্শনে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রিতে ভূষিত করে। ১৯৯৯ সালের ২৮ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাহিত্যে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি ‘দেশীকোত্তম’ প্রদান করে। ২০ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সমাজসেবায় সৃজনশীল অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকে ডক্টরেট অব ল' ডিগ্রিতে ভূষিত করে। শান্তি ও গণতন্ত্রের কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য একই বছরের ১৮ ডিসেম্বর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টর অব ল' ডিগ্রিতে ভূষিত হন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সংরক্ষণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ব্রাসেলসের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। একই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিজপাের্ট বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে ডক্টর অব হিউম্যান লেটারস-এ ভূষিত করে। ২৭ জুন ২০০৫ সালে রাশিয়া ফেডারেশনের মস্কো পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি ডক্টরেট অব সায়েন্স ডিগ্রি প্রদান করে। ২০০৫ সালের ৬ এপ্রিল ফিলিপিনের পার্লামেন্ট কংগ্রেশনাল মেডেল অব এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। রাজনৈতিক সাহসিকতা ও রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্বের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৫ বছরের সংঘাত নিরসন করে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ সালে তিনি পান ইউনেস্কোর হুফে-বােইনি শান্তি পুরস্কার।