৳ ২৫০ ৳ ২১৩
|
১৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
ভূমিকা :
বেগম রোকেয়া ছিলেন মুসলিম নারী জাগরণের পথিকৃৎ। শত সহস্র বৎসরের সংস্কার আর পুরুষশাসিত সমাজের শোষণ-শাসনের শৃঙ্খল ভেঙ্গে বাঙালি নারীকে সভ্যতার আলোকবর্তিকা দেখাতে চেয়েছিলেন তিনি। অন্ধকারাবদ্ধ ঘরে রুগ্ন-বন্দি নারীর অসহায় চিৎকার তাঁর মতো করে সে কালে আর কেউ উপলব্ধি করে নি। সবচেয়ে বড় কথা নারী যে মানুষ এই মানবিক ও সামাজিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতে আজীবন তিনি মেধা ও শ্রমে নিয়োজিত ছিলেন। সামাজিক সংগঠন, নারী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়াও তৎকালীন বাংলার দুর্ভাগা নারীদেরকে সচেতন করতে বেগম রোকেয়া কলম ধরেছিলেন। লিখেছেন গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রসরচনা ও কবিতা। তাঁর এ সাহিত্য সাধনার পশ্চাতে কাজ করেছে— সমাজ সংস্কারসহ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও আত্মসচেতনতা বৃদ্ধির বাসনা। অসাধারণ মেধা, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, শাণিত যুক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তাঁর মননধর্মিতা। আর তাই রোকেয়ার সাহিত্য শুধু বিনোদনের সাহিত্য না-হয়ে বিশ শতকের প্রথম তিন দশকের বাংলার সমাজ- সংস্কার ও পিছিয়ে থাকা নারীদের জীবনঘনিষ্ঠ ও বাস্তবনিষ্ঠ জলছবি হয়ে উঠেছে। ‘রবীন্দ্র- যুগে যে কয়জন মুসলিম মহিলা বাংলা সাহিত্য সাধনা ক'রে যশ অর্জন করেন, বেগম রোকেয়া তাঁদের মধ্যে প্রথম এবং শ্রেষ্ঠ’ (বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত, মুহাম্মদ আবদুল হাই ও সৈয়দ আলী আহসান, ১৩৮৫, পৃ. ১৭৬) ।
ঊনিশ শতকে রামমোহন বিদ্যাসাগররা সমাজ সংস্কারের যে গুরুদায়িত্ব হাতে নিয়েছিলেন বিশ শতকে বেগম রোকেয়াও তাই করেছিলেন। বিদ্যাসাগরদের লক্ষ্য ছিল হিন্দু সমাজ, রোকেয়ার ছিল মুসলিম সমাজ— বিশেষ করে নারীরা। রামমোহনরা ছিলেন সেকালের প্রভাবশালী পুরুষ, পক্ষান্তরে রোকেয়া পর্দানশীল স্বশিক্ষিত এক গৃহাবদ্ধ নারী। তবু সমাজের রক্তচক্ষুকে ভয় না করে নিজ হাতে মেয়েদের জন্যে তিনি স্কুল করেছেন, বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাত্রী সংগ্রহ করেছেন। বিশ শতকের সূচনালগ্নে একজন মুসলিম নারীর জন্যে এ-কাজটি যে মোটেই সহজ ছিল না, তা বলাই বাহুল্য। তাঁর কালের নারী-শিক্ষা সম্প্রসারণ ও সমাজসেবার প্রতিকূলতা প্রসঙ্গে তিনি তাঁর অবরোধ-বাসিনীর ভূমিকায় লিখেছেন—
উড়িষ্যা ও মাদ্রাজে সাগরতীরে বেড়াইতে গিয়া বিচিত্র বর্ণের বিবিধ আকারের ঝিনুক কুড়াইয়া আনিয়াছি। আর জীবনের ২৫ বৎসর ধরিয়া সমাজসেবা করিয়া কাঠমোল্লাদের অভিসম্পাত কুড়াইতেছি।
Title | : | শ্রেষ্ঠ রোকেয়া |
Author | : | বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন |
Publisher | : | ন্যাশনাল পাবলিকেশন |
ISBN | : | 97898490080113 |
Edition | : | 2012 |
Number of Pages | : | 198 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (সাহিত্যসেবী মহলে তিনি বেগম রোকেয়া নামেই সমধিক পরিচিত; জন্ম ৯ ডিসেম্বর ১৮৮০ - মৃত্যু ৯ ডিসেম্বর ১৯৩২) হলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তাঁকে বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে গণ্য করা হয়। তার প্রকৃত নাম "রোকেয়া খাতুন" এবং বৈবাহিকসূত্রে নাম "বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন"। রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন ৯ ডিসেম্বর ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার অর্ন্তগত পায়রাবন্দ গ্রামে। তাঁর পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী ছিলেন। তাঁর মাতা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। রোকেয়ার দুই বোন করিমুননেসা ও হুমায়রা, আর তিন ভাই যাদের একজন শৈশবে মারা যায়। তিনি একজন অসাধারণ নারী।১৮৯৮ সালে ১৮ বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। বিয়ের পর তিনি "বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন" নামে পরিচিত হন। তাঁর স্বামী মুক্তমনের মানুষ ছিলেন, রোকেয়াকে তিনি লেখালেখি করতে উৎসাহ দেন এবং একটি স্কুল তৈরির জন্য অর্থ আলাদা করে রাখেন। রোকেয়া সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯০২ সালে পিপাসা নামে একটি বাংলা গল্প লিখে সাহিত্যজগতে তার অবদান রাখা শুরু হয়। স্কুল পরিচালনা ও সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রোকেয়া নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রাখেন। ১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। বিভিন্ন সভায় তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। ১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারী শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় তিনি ‘নারীর অধিকার’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখছিলেন। তাঁর কবর উত্তর কলকাতার সোদপুরে অবস্থিত যা পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অমলেন্দু দে আবিষ্কার করেন । বাংলাদেশের ৭ম বিভাগ হিসেবে রংপুর বিভাগের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে 'রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়' ৮ অক্টোবর ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর ২০০৯ সালে 'নারী জাগরণের অগ্রদূত' হিসেবে তাঁর নামকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করেন । উল্লেখ্য , নারীর নামে বাংলাদেশে প্রথম কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এটি।ছাড়াও, মহিয়সী বাঙালি নারী হিসেবে বেগম রোকেয়ার অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য "রোকেয়া হল" নামকরণ করা হয়। রোকেয়ার তাঁর নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন মতিচূর প্রবন্ধসংগ্রহের প্রথম (১৯০৪) ও দ্বিতীয় খণ্ডে (১৯২২)। সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫), পদ্মরাগ (১৯২৪), অবরোধবাসিনী (১৯৩১) ইত্যাদি তাঁর সৃজনশীল রচনা। তাঁর সুলতানার স্বপ্নকে বিশ্বের নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয়।
If you found any incorrect information please report us