রাজবংশী (হার্ডকভার)
রাজবংশী (হার্ডকভার)
৳ ১০০০   ৳ ৮৫০
১৫% ছাড়
2 টি Stock এ আছে
Quantity  

১১৯৯ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY

Home Delivery
Across The Country
Cash on Delivery
After Receive
Fast Delivery
Any Where
Happy Return
Quality Ensured
Call Center
We Are Here

ভারতবর্ষে যে সকল আদিবাসী তাদের প্রাচীন লোকবিশ্বাস তথা লোকজধর্ম থেকে বহিরাগত আর্য-বর্ণহিন্দু ব্রাহ্মণ্যবাদীদের আর্থিক স্বার্থ, চাপ, প্রভাব-পতিপত্তি ও প্রলোভনের কারণে হিন্দুত্ব গ্রহণে বাধ্য হয় তাদের মধ্যে অনার্য আদি অস্ট্রিক ও অনার্য কিরাত জাতিভুক্ত মঙ্গেলপ্রতিম জাতিসমূহও রয়েছে। হিন্দুত্ব গ্রহণকারী রাজবংশীরা ভোট-ব্রহ্ম শাখার বোড়ো [Bodo] জনগোষ্ঠীর মহামঙ্গোলীয় রক্তধারার মানবভুক্ত মিশ্রজাতি। কেননা, তাদের মধ্যে অস্ট্রিক জাতির মিশ্রণও কম হলেও ঘটেছে। হিন্দুত্বে ধর্মান্তরিত হলেও রাজবংশীরা তাদের প্রাচীন প্রাগার্য কালের পূজা-পার্বণ, আচার-আচরণ সংস্কার-প্রথা অনেকাংশেই পরিত্যাগ করেনি। বরং বর্ণহিন্দু-আর্যরা রাজবংশীদের নানা লোকজধর্মকে হিন্দুধর্মের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে।
বাংলাদেশের সামান্য সংখ্যক রাজবংশী যাদের আবাস বৃহত্তর রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ ও যশোহর অঞ্চলে। আর বৃহৎ জনসংখ্যার [এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষের অধিক] রাজবংশীর বাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুর দুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, আসাম রাজ্যের কামরূপ, গোয়ালপাড়া ও ধুবড়ী এবং মেঘালয় রাজ্য ছাড়াও পশ্চিম বিহার অঞ্চলে। এছাড়াও নেপালের ঝাঁপা জেলায়ও তাদের বসবাস রয়েছে।
ইতিহাসের নানা বয়ান ও তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সুদূর অতীত এবং নিকট অতীতেও রাজবংশী জাতির অস্তিত্বের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। মূলত এরা কোচ জাতিরই শাখা নৃগোষ্ঠী। কিন্তু রাজবংশীরা এই মতের বিরুদ্ধাচরণ করে নিজেদের রাজার অনুগামী আলাদা জাতি হিসেবে বর্ণ হিন্দুর উচ্চবর্ণের ক্ষত্রিয় বলে পরিচয় প্রদানে উৎসাহী। আর এই ক্ষত্রিয়ত্বের দাবীতে তারা আন্দোলন-সংগ্রামসহ উচ্চ আদালতে মামলা-মোকদ্দমা পর্যন্ত করেছে। তৎসত্ত্বেও তাদের পূজা-পার্বণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, ভাষা-সংস্কৃতি ও জীবনাচার কোচদের থেকে ভিন্ন নয়-- বরং অভিন্নই বটে!
রাজবংশীরা ধর্মে শিব-উপাসক ও বৈষ্ণব। তা ছাড়াও তাদের রয়েছে নিজস্ব আদিম পূজা-পার্বণ। যেমন : বৃষ্টি কামনার হুদুম দেও পূজা-- যা রাজবংশী নারীরা রাতে ধানের ক্ষেতে উলঙ্গ হয়ে নৃত্য ও লোকসঙ্গীত পরিবেশন করে। তেমনি রয়েছে সুবচনী পূজা, ষষ্ঠী পূজা, ধর্মঠাকুরের পূজা, কার্তিক পূজা, গাইটে পূজা, হ্যাঁচড়া-প্যাঁচড়া পূজা, চড়ক পূজা, ত্রিনাথের পূজা, সাইটোল পূজা, কালী, শীতলা, লক্ষ্মী ও মনসার পূজা। আর এ সকলই প্রাগার্য-পূর্ব অনার্যদের প্রাচীন লোকজপূজা। তা ছাড়াও রাজবংশীদের মাঝে রয়েছে নানা ব্রতানুষ্ঠান ও স্ত্রী আচার। যেমন : সাধভক্ষণ ও রজঃসক্রান্তিসহ নানা আচার-প্রথা এবং অনক্ষর সমাজের সংস্কার ও বৈশিষ্ট্য।
রাজবংশীদের ভাষা কামরূপী বা কামতাপুরী। আদি রংপুরী ভাষারও প্রাধান্য এই ভাষায় বহমান। যা বোড়ো ভাষার সঙ্গে বাংলা, সংস্কৃত, প্রাকৃত ও মাগধী ভাষার সংমিশ্রিত রূপও বলা যায়। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ভাষার প্রভাবও লক্ষণীয়। শিক্ষা-দীক্ষায় বাংলাদেশে পিছিয়ে থাকলেও ভারতে তারা নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে।
আদিবাসী মণিপুরী ও ত্রিপুরীদের মতো রাজবংশীদের লোকসাহিত্য, লোকসঙ্গীত ও লোকনৃত্য সমৃদ্ধ-সংস্কৃতি। বিশেষত তাদের ভাওয়াইয়া গান বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। যেমন : পিরিত নামের ফুল ফুটলো--/মুই সুন্দরী মনের হাউসে পাটানি পিন্দিয়া/সোনার জীবন পার করিনু/সাধুর লাগি নদীর পাড়ত ঘর বান্দিয়া॥
এই গ্রন্থে রাজবংশীদের জাতি পরিচয়, নৃতাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট, ধর্ম ও পূজা-পার্বণ, ভাষা-সংস্কৃতি, তাদের গোত্র পরিচয়, পরিবার গঠন, বিবাহ প্রথা এবং জীবনাচার আলোচিত হয়েছে। বাংলাদেশে ক্ষুদ্র হলেও ভারতের এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উপর রচিত এই গ্রন্থ উৎসাহী পাঠকদের ভালো লাগবে বলে আশা করা যায়।

Title : রাজবংশী
Author : মুস্তাফা মজিদ
Publisher : জার্নিম্যান বুকস
ISBN : 9789849765042
Edition : 1st Published, 2024
Number of Pages : 392
Country : Bangladesh
Language : Bengali

কবি ও গবেষক মুস্তাফা মজিদ লেখালেখি করেন কৈশোর থেকে (১৯৭০)। মার্কসবাদ-লেনিনবাদ এবং মাও সে-তুঙ এর চিন্তাধারায় উজ্জীবিত হয়ে কৈশোরেই তিনি গোপনে পূর্ব পাকিস্তানের এ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)-এর রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন । গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক করেছেন ঢাকাতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন থেকে স্নাতক সিম্মান), স্নাতকোত্তর, এম ফিল ও পিএইচ ডি করেছেন। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জার্মানীতে।
মূলত তিনি কবি ও গবেষক এবং সম্পাদনায় যুক্ত। তার রচিত ও সম্পাদিত প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৫৬। ১০টি কাব্যগ্রন্থ সহ উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ ও গবেষণা গ্রন্থ: বাংলাদেশের রাখাইন’, ‘The Rakhaines' {পিএইচ ডি গবেষণা], ত্রিপুরা জাতি পরিচয়', 'ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিচয়, চাকমা জাতিসত্তা', আদিবাসী রাখাইন', 'মারমা জাতিসত্তা', বাংলাদেশে মঙ্গোলীয় আদিবাসী’, ‘গারে জাতিসত্তা', 'হাজং জাতিসত্তা', আদিবাসী সংস্কৃতি [১ম ও ২য় খ-, 'লোক প্রশাসনের তাত্ত্বিক প্রসঙ্গ’, ‘আমলাতন্ত্রের স্বরূপ”, “বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র, রাজনীতিতে সামরিক আমলাতন্ত্র', 'নেতৃত্বের স্বরূপ', বাংলাদেশে বঙ্কিমচন্দ্র', মুক্ত ও মুগ্ধ দৃষ্টির রবীন্দ্র বিতর্ক, শতবর্ষে অক্টোবর বিপ্লব’, ‘অক্টোবর বিপ্লবের তিন কবি' ইত্যাদি। আর ছোটদের জন্য কাব্যগ্রন্থ “স্বাতীর কাছে চিঠি', গল্পগ্রন্থ 'দীপুর স্বপ্নের অরণি ও জীবন থেকে; ‘ছোটদের ৭টি মঞ্চ-নাটক এবং জীবনীগ্রন্থ রূপকথার নায়ক হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন' ও বঙ্গবীর ওসমানী।
ড. মুস্তাফা মজিদ ছাত্রাবস্থায় কাজ করেছেন খবরের কাগজে রিপোর্টারের ১৯৭৪-১৯৮৪]। পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে উপ পরিচালক থেকে মহাব্যবস্থাপক পদে [১৯৮৪-২০১৪] । তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সাহিত্যিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে যুক্ত। যেমন: স্বদেশ চিন্তা সঞ্জ, ছায়ানট জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ লেখক শিবির কচি-কাঁচার মেলা, ঢাকা থিয়েটার, ঢাকা শিশু নাট্যম অন্যতম। বর্তমানে তিনি বিজ্ঞান-সাহিত্য-সংস্কৃতির ত্রৈমাসিক ‘অনীক'-এর সম্পাদক ও সমাজ সন্দর্শন কেন্দ্র'-এর সভাপতি।
এছাড়া তিনি নিজ গ্রাম পটুয়াখালী জেলার সুবিদখালীতে স্ব-উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত ছেলেমেয়েদের জন্য পরী পাঠাগার, সংগীত ও বিজ্ঞান বিদ্যাপীঠ' নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন ।
জন্ম ১৪ এপ্রিল ১৯৫৩ । ভ্রমণ করেছেন ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইডেন, জার্মানী, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, ভারত, থাইল্যান্ড, চীন, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা।


If you found any incorrect information please report us


Reviews and Ratings
How to write a good review


[1]
[2]
[3]
[4]
[5]