৳ ৪৫০ ৳ ৩৮৩
|
১৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানে কিন্তু বিস্ময় কিশোরী আনা ফ্রাঙ্ককে ও তাঁর অজানা আত্মজীবনী যিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন তার চেনা আনা ফ্রাঙ্ককে ক’জন জানে? সেই শ্বাসরুদ্ধকর বিভীষিকাময় ১৩ বছরের একটি কিশোরীর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে থাকা ও মৃত্যুর অনবদ্য তথ্যসমৃদ্ধ ইতিহাস অনেকেরই জানা থাকার কথা নয়। আর্নস্ট শ্ন্যাবেল অতি যতœসহকারে খুঁজে এনেছেন কিশোরী আনা ফ্রাঙ্ককে। এমন সব কথা ও রহস্য সম্বন্ধে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যা অনেকেরই অজানা।
‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি’ অথবা ডায়েরির আনা ফ্রাঙ্ক-এর খোঁজ রাখেন না, এমন সাহিত্যপাঠক আজকের পৃথিবীতে বিরল বললেও অত্যুক্তি হয় না। আনা ফ্রাঙ্ক নামক আশ্চর্য প্রতিভাময়ী বালিকা এবং সদ্য-কিশোরীটির গল্প-উপন্যাস-স্মৃতিকথার সঙ্গেও এতদিনে অনেকটাই পরিচিত পাঠকমহল। কিন্তু সেইটুকুই তো সব নয়, শেষ নয়! ডায়েরি অথবা গল্প-উপন্যাসের বাইরে যে আনা ফ্রাঙ্ক, তাকে কজন জানে।
ফ্রাঙ্ক পরিবার ছিল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট-অন-মাইন শহরের বাসিন্দা, ধর্মের বিচারে ইহুদি। পরিবারের প্রধান যে মানুষটি, তাঁর নাম অটো ফ্রাঙ্ক। বিয়ে করেছেন এডিথ হল্যান্ডার নামে একটি মেয়েকে। গড়ে উঠছে সংসার, একান্ত নিজস্ব একটি বৃত্ত, যে বৃত্তের বাসিন্দা দুটি নারী-পুরুষ আবিষ্কার করতে শুরু করেছেন জীবনকে, উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন জীবন কত সুন্দর। অভিজ্ঞ জনদের ভাষায় শুরু হয়েছে তাঁদের সত্যিকারের জীবন। ফ্রাঙ্ক-দম্পতির এই জীবন-আবিষ্কার নতুন মাত্রা পেল ১৯২৯ সালে, যখন পৃথিবীর আলোয় চোখ মেলল তাঁদের প্রথম সন্তান, একটি কন্যাÑ মারগট। নদী মিশল সাগরে, বাস্তব হলো মোহনার স্বপ্ন। কিন্তু ফ্রাঙ্ক পরিবারের জীবনে তখনও আরেকটি ঘটনা ঘটার অপেক্ষায়, যে ঘটনাটির জন্য আজও সারা দুনিয়ায় উচ্চারিত হয় ফ্রাঙ্ক পরিবারের নাম এবং কলম ধরতে হয় আর্নস্ট শ্ন্যাবেলকে। আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাটি নিতান্তই সাধারণ : একটি শিশুর জন্ম, সাগর-নদীর মিলনের আর একটি মোহনা। কিন্তু এই শিশুর জন্ম যে পৃথিবীর জনসংখ্যায় নিছকই একটি সংখ্যা যোগ হওয়ার ঘটনামাত্র ছিল না, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব নিয়েছিল পরবর্তী ইতিহাস। এবং আজ তা প্রমাণিত। ১৯২৯ সালের ১২ জুন জন্ম নিয়েছিল ফ্রাঙ্ক দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান আনা ফ্রাঙ্ক। বেঁচে থাকলে আজ তার বয়স ছিয়াশি পেরোত। বেঁচে থাকেনি আনা, বাঁচতে দেওয়া হয়নি তাকে। অথবা বেঁচেই আছে আনা, সব থেকে কাক্সিক্ষত বাঁচা এবং এ-রকম অসংখ্য ছিয়াশি বছর পেরিয়ে বেঁচেই থাকবে সে। ঊনিশশো তিরিশের দশকের জার্মানি। মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে এক ভয়াবহ বিশ্বশক্তি, পায়ে পায়ে সামনের সারিতে এগিয়ে চলেছে মানুষের খোলস পরা এক মৃত্যুদূতঃ সে সময় হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানির হৃদযন্ত্রে অধিকার কায়েম করছে নাজি বাহিনী। সুপরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে চরম উগ্র জাতীয়তাবাদ আর জাত্যাভিমানের তীব্র বিষ। আক্রমণের বর্শামুখ চালিতে হচ্ছে ইহুদিদের দিকে। এতদিনের সাধের জার্মানি জন্মভূমি আর বাসযোগ্য থাকলো না ইহুদিদের কাছে। তারা দলবেঁধে স্বদেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করল।
ফ্রাঙ্ক পরিবারও ইহুদি। আতঙ্কিত অটো ফ্রাঙ্ক সিদ্ধান্ত নিলেন দেশ ছাড়ার, ১৯৩৩ সাল। মারগটের বয়স তখন সাত, আনার চার। স্ত্রী আর দুই মেয়েকে নিয়ে জার্মানি ছেড়ে হল্যান্ডে চলে গেলেন অটো ফ্রাঙ্ক। অজ¯্র পরিবারের সঙ্গে ছিন্নমূল হলো আরেকটি বনেদী পরিবার। শৈশবের স্বপ্নশহরে ছেড়ে দূরে এক অচেনা শহরে পাড়ি দিল দুটি অবুঝ শিশু।
হল্যান্ড আমস্টার্ডম শহর। ট্রাভিস এন.ভি.-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে যোগ দিলেন অটো ফ্রাঙ্ক। পরের বছর পাঁচ বছরের আনা ভর্তি হলো মন্তেসরি কিন্ডারগার্টেনে। দিনের পরে দিন। আমস্টার্ডাম শহরের জল-হাওয়ায় আলো-ছায়ায় বেড়ে উঠছে মারগট আর আনা। সাইকেলে চড়ে স্কুলে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে রঙচঙে মুহূর্ত, বড়বোন আর মাস্টারমশাইদের নিয়ে মজা করা। এইভাবেই চলতে পারত, কিন্তু চলেনি।
১৯৩৯ সালে দশ বছরে পা রাখল আনা আর সেই বছরই পৃথিবী গ্রহে শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নামক একটি গণহত্যা মহোৎসব। হিটলারের নাজি বাহিনীর বিষনখে ফালাফালা হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর মাটি। হল্যান্ডে বসে তখনও পড়াশোনা করে চলছে আনারা। ১৯৪১ সালে তেরো বছরের আনা ভর্তি হয়েছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ওদিকে জার্মানির মাঠ-ঘাট-রাজপথ প্রতিদিন ¯œাত হচ্ছে ইহুদিদের রক্তে। হতভাগ্য অগণিত ইহুদি দিন কাটাচ্ছে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের মৃত্যুমাখা অন্ধকারে। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে দেশ ছেড়ে অনিশ্চিতে পথে পা বাড়িয়েছেন অনেকে এবং এই নির্বাসিতের তালিকার একটি বিশ্বখ্যাত নাম বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনও ছিলেন। ঐ ১৯৪১ সালেই হিটলারের খুনে বাহিনী হল্যান্ড দখল করল। শবলোভী শকুনের ডানায় ঢাকা পড়ল সূর্য। একের পর এক ইহুদি-বিরোধী ফতোয়া জারি করে চলল দখলদার নাজিবহিনী। ইহুদিরা ট্রেনে চড়তে পারবে না, ট্রামে চড়তে পারবে না, ‘ইহুদিদের দোকান’ বোর্ড টাঙানো গুটিকয়েক দোকান থেকে কেনাকাটা সারতে হবে। বেলা তিনটে থেকে পাঁচটার মধ্যে, বাইসাইকেল চড়া নিষিদ্ধ, সিনেমা-থিয়েটার কিংবা বারোয়ারি খেলাধুলোয় ইহুদিদের প্রবেশ নিষেধ, বাড়ির বাইরে যাওয়া চলবে না রাত আটটায় পরÑ এমনকি নিজেদের বাড়ির বাগানেও রাত আটটার পর বসা আইনত দ-নীয়, পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি ‘ইহুদি বিদ্যালয়’ এবং প্রত্যক ইহুদির জামায় একটি ছকোণা ‘হলুদ তারা’ লাগানে বাধ্যতামূলক। এই তারাটি ইহুদিদের পরিচয়ঘোষক কে ইহুদি আর কে ইহুদি নয়, তার নির্লজ্জ নিশান।
অত্যাচার নতুন নজীর গড়তে শুরু করল। বন্দিশিবিরে হাজার হাজার ইহুদি চিনে নিচ্ছে জীবনের মধ্যে মৃত্যুকে, জেনে নিচ্ছে বেঁচে থাকা নামক জীবনের থেকে মৃত্যু কত কাক্সিক্ষত। পায়ে পায়ে ১৯৪২ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তিন বছরের দানব। জুলাই মাসের পাঁচ তারিখ নাজি ঝটিকাবাহিনী সমন পাঠাল অটো ফ্রাঙ্কের নামে। সময় শেষ, এখন শেষের মাদল গর্জমান। কিন্তু আত্মসমর্পণ করে বন্দিশিবিরের বাসিন্দা হতে রাজি ছিলেন না অটো ফ্রাঙ্ক। কয়েকজন বন্ধুর সাহায্য নিয়ে নিজেদের অফিস-বাড়ির পেছন দিকে বানিয়ে নিলেন ‘গোপন আস্তানা’। সামনের দিকে সাজানো রইল মানুষের নজর এড়ানোর নানান কৌশল। ৬ জুলাই তারিখ থেকে ঐ ‘গোপন আস্তানার’ বাসিন্দা হলো দুটি ইহুদি পরিবার, মোট আটজন মানুষÑ ফ্রাঙ্ক পরিবারের চারজন, তাঁদের বন্ধু ফান ডান পরিবারের তিনজন আর ডুসেল।
‘গোপন আস্তানায়’ যাওয়ার আগে ঐ ডায়েরিতে দশদিন শব্দ গেঁথেছে আনার কলম। তারপর আত্মগোপনে দু বছর এক মাস। এই পঁচিশ মাসে ঐ ডায়েরির পৃষ্ঠায় জন্ম দিয়েছে চিরন্তনী এক আনা ফ্রাঙ্ক। অমেয় গভীরতা আর আশ্চর্য সারল্যে ডায়েরির ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে এক সংবেদনশীল মন এবং মনন, তার জীবনবোধ, মানুষ প্রকৃতি ঈশ্বর বিষয়ে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, সেই সময়ের পৃথিবীর যুদ্ধ নামক ভয়ঙ্করতম ঘটনাটি সম্বন্ধে তার ভাবনা আর সমস্ত কুৎসিতকে অগ্রাহ্য করে জীবনকে প্রস্ফুটিত করার অপ্রতিরোধ্য আকাক্সক্ষা। দুঃখ আছে, মৃত্যু আছে, তবুও কোথাও কেউ চেয়ে থাকে আকাশ ভরে। ধূসর আমলকি পাতায় রয়ে যায় অমল চিহ্ন। কিশোরী বেঁচে থাকে মৃত্যু পেরিয়ে আর সেই বেঁচে থাকার ছাড়পত্রই ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি’। এই ডায়েরিকে উপজীব্য করে নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে নানা জায়গায়, দূরদর্শনের জন্য তৈরি হয়েছে সিরিয়াল, টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স নির্মাণ করেছে চলচ্চিত্র যার পরিচালক জর্জ স্টিভেন্স। ডায়েরিটি অনূদিত হয়েছে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ভাষায়।
কিন্তু ঐ ডায়েরির লেখাপত্র ছাপার হরফে প্রকাশ পাওয়া তো অনেক পরের কথা। তার আগে তো গোপন আস্তানা তছনছ করে আটজন মানুষকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল বন্দিশিবিরের গাঢ়তম অন্ধকারে! ১৯৪৪ সালের ১ আগস্ট, মঙ্গলবার, শেষবারের মতো ডায়েরি লিখেছিল আনা। তার ঠিক তিনদিন পর, ৪ আগস্ট, শুক্রবার, গোপন আস্তানায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল একদল রক্তপিপাসু হায়েনা নাৎসি পুলিশ বাহিনীর কিলিং স্কোয়াডের সক্রিয় সদস্য। পঁচিশ মাসের আশ্রয়টি তছনছ করে আটজন মানুষকে বন্দি করে নিয়ে গিয়েছিল ওরা, যাদের একমাত্র অপরাধÑ জন্মসূত্রে তারা ইহুদি!
Title | : | আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি |
Author | : | আনা ফ্রাঙ্ক |
Translator | : | ফারুক হোসেন |
Publisher | : | কলি প্রকাশনী |
ISBN | : | 9789849732020 |
Edition | : | 1st Published, 2023 |
Number of Pages | : | 450 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
আনেলিস মারি ‘আন’ ফ্রাংক (১২ জুন ১৯২৯ — ১৯৪৫ সালের মার্চের শুরুর দিক পর্যন্ত) তার জন্ম ভাইমার জার্মানির ফ্র্যাংকফুর্ট আম মাইন শহরে,কিন্তু তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়কার তার দিনলিপি এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম সর্বাধিক পঠিত বই এবং অনেক চলচ্চিত্র ও নাটকের মূল বিষয় হিসেবে গৃহীত। ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয়। এটি মূল ওলন্দাজ ভাষা থেকে পরবর্তীকালে ১৯৫২ সালে প্রথম বারের মতো ইংরেজিতে অনূদিত হয়। এর ইংরেজি নাম হয় দ্য ডায়েরি অফ আ ইয়াং গার্ল। যেখানে অ্যানার জীবনের ১২ জুন ১৯৪২ থেকে ১ আগস্ট ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত সময়ের ঘটনাগুলো ফুটে উঠেছে।
If you found any incorrect information please report us