ভারতবর্ষের ইতিহাস (হার্ডকভার)
ভারতবর্ষের ইতিহাস (হার্ডকভার)
অনুবাদক:
প্রকাশনী:
বিষয়:
৳ ১২০০   ৳ ৯০০
২৫% ছাড়
Quantity  

৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY

প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়;  ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER

Home Delivery
Across The Country
Cash on Delivery
After Receive
Fast Delivery
Any Where
Happy Return
Quality Ensured
Call Center
We Are Here

মুসলিম রাষ্ট্রশক্তি প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পূর্বের হিন্দুস্থানের অবস্থার কথা স্মরণ করিয়া প্রসিদ্ধ উর্দুভাষী কবি হালি বলিয়াছিলেন, ‘ইধর হিন্দ’মে হরতরফ আন্ধেরা’ -এদিকে হিন্দুস্থানে তখন চারদিকে অন্ধকার’! এ-কথার ঐতিহাসিক সত্যতা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। বাংলাদেশের পক্ষেও এ-কথা সমান সত্য। বস্তুত, এদেশে বৈদেশিক মুসলিম রাষ্ট্রশক্তির প্রতিষ্ঠা কিছু আকস্মিক ঘটনা নয়, দৈবের অভিশাপও নয়, তাহা কার্যকর সম্বন্ধের অনিবার্য শৃঙ্খলায় বাঁধা।

 কারণ সমাজদেহে যতদিন জীবনীশক্তি থাকে ততদিন ভিতর-বাহির হইতে যত আঘাতই লাগুক সমাজ আপন শক্তিতেই তাহাকে প্রতিরোধ করে, প্রত্যাঘাতে তাহাকে ফিরাইয়া দেয়, অথবা জীবনের কোনো ক্ষেত্রে বা কোনো পর্যায়ে পরাভব মানিলেও অন্য সকল ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে নূতনতর শক্তিকে আত্মসাৎ করিয়া নিজেকেই শক্তিমান করিয়া তোলে। সমাজেতিহাসের এই যুক্তি প্রায় জৈব-জীবনেরই বিবর্তনের যুক্তি। ভারতবর্ষের প্রাচীন ইতিহাস এই বিবর্তন-যুক্তির জলন্ত দৃষ্টান্ত। এই যুক্তিতেই ভারতবর্ষ বার বার তাহার রাষ্ট্রীয় পরাধীনতাকে নূতনতর সমাজশক্তিতে রূপান্তরিত করিয়াছে, সকল আপাতবিরুদ্ধ প্রবাহকে, বিরোধী শক্তিকে সংহত করিয়া তাহাকে নূতন রূপদান করিয়া নিজেকেই সমৃদ্ধ ও শক্তিমান করিয়াছে, সমাজদেহে জড়ের জঞ্জাল স্তূপীকৃত হইতে দেয় নাই।

 কিন্তু নানা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে, ব্যক্তি, বর্ণ ও শ্রেণীস্বার্থবুদ্ধির প্রেরণায় সমাজদেহ যখন ভিতর হইতে ক্রমশ পঙ্গুত্ত দুর্বল হইয়া পড়ে তখন ভিতরে ভিতরে জড়ের জঞ্জাল এবং মৃতের আবর্জনা ধীরে ধীরে জমিতে জমিতে পুঞ্জ পুঞ্জ স্তূপে পরিণত হয়, জীবনপ্রবাহ তখন আর স্বচ্ছ সবল থাকে না, মরুবালিরাশির মধ্যে তাহা রুদ্ধ হইয়া যায়, অথবা পঙ্কে পরিণত হয়। সমাজদেহে তখন ভিতর-বাহিরের কোনো আঘাতই সহ্য করিবার মতন শক্তি ও বীর্য থাকে না, প্রত্যাঘাত তো দূরের কথা। বিবর্তনের যুক্তিও তখন আর সক্রিয় থাকে না। বস্তুত, দান ও গ্রহণের সমন্বয় ও সাঙ্গীকরণের যে-যুক্তি বিবর্তনের গোড়ায়, অর্থাৎ বিবর্তনের যাহা স্বাভাবিক জৈব-নিয়ম তাহা পালন করিবার মতো শক্তিই তখন আর সমাজদেহে থাকে না।

 সমাজের এই অবস্থাই বিপ্লবের ক্ষেত্র রচনা করে। বস্তুত, ইহাই বিপ্লবের ইঙ্গিত। কিন্তু ইঙ্গিত থাকিলেই, ক্ষেত্র প্রস্তুত হইলেই বিপ্লব ঘটে না। সেই ইঙ্গিত দেখিবার ও বুঝিবার মতো বুদ্ধি ও বোধ থাকা প্রয়োজন, ক্ষেত্রে ফসল ফলাইবার মতো প্রতিভা ও কর্মশক্তি, সংহতি ও সংঘশক্তি থাকা প্রয়োজন। নইলে ইঙ্গিত ইঙ্গিতই থাকিয়া যায়, সময় বহিয়া যায়, বিপ্লব ঘটে না। এমন অবস্থায় বাহির হইতে ঝড় আসিয়া যখন বুকের উপর ভাঙ্গিয়া পড়ে তখন আর তাহাকে ঠেকানো যায় না, এক মুহূর্তে সমস্ত ধূলিসাৎ হইয়া যায়, বিপ্লবের ইঙ্গিত অন্যতর, নূতনতর ইঙ্গিতে বিবর্তিত হইয়া যায়, ক্ষেত্রের চেহারাই অনেক সময় একবারে বদলাইয়া যায়, একেবারে নূতন সমস্যা দেখা দেয়। আর বাহির হইতে ঝড় না লাগিলে, যথাসময়ে বিপ্লব না ঘটাইলে পঙ্গু, দুর্বল ও ক্ষীয়মাণ সমাজ আপনা হইতেই তখন ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হইতে থাকে এবং একদিন জৈব-নিয়মেই মৃত্যুর কোলে ঢলিয়া পড়ে।

 তখন আবার ভ্রুণাবস্থা হইতে নূতন সমাজদেহের উদ্ভব ঘটে। উভয় ক্ষেত্রেই দিনের পর দিন, যুগের পর যুগ ধরিয়া পরবর্তী কালকে তাহার মূল্য দিয়া যাইতে হয়। বাংলা ও ভারতবর্ষের ইতিহাসের গভীরে নানা দিক হইতে দেখিলে মনে হয়, সেই মূল্যই আজও আমরা দিতেছি এবং পূর্ণ মূল্য না দিয়া অগ্রসর হইবার উপায়ও বোধহয় নাই।

Title : ভারতবর্ষের ইতিহাস
Author : কোকা আন্তোনোভা
Translator : দ্বিজেন শর্মা
Publisher : নিয়ন
ISBN : 9789849912538
Edition : 1st Published, 2024
Number of Pages : 736
Country : Bangladesh
Language : Bengali

If you found any incorrect information please report us


Reviews and Ratings
How to write a good review


[1]
[2]
[3]
[4]
[5]