এই বইটি বর্তমানে প্রকাশনীতে মুদ্রিত কপি নেই। আপনি চাইলে বইটির জন্য রিকোয়েস্ট করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বইটি পুনর্মুদ্রণ হলে আমরা আপনাকে জানাবো।
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১১৯৯+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৬৯৯+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
মাদারিপুর অঞ্চলে কবে, কোথায় প্রথম জনবসতি গড়ে উঠেছে তা নির্ণয় করা এক প্রকার অসম্ভব। তবে বঙ্গে জনপ্রবাহের আলোকে মাদারিপুরে জন প্রবাহের ঐতিহাসিক পর্যালোচনা সম্ভব। ইতিহাস গবেষণায় যে সব বড় বাধা আছে তার মধ্যে তথ্যের অপ্রতুলতা ও বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের অসঙ্গতি অন্যতম। এই দুটোর কারণে চাইলেও একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গুছানো রচনা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রাচীন বাংলার জনপ্রবাহের কিছু সংবাদ পাওয়া যায় বেদপুরাণ, মহাভারত গ্রন্থ, আলেকজান্ডার ও টলেমির বর্ণনা এবং বিভিন্ন লিপি ও পট্রলী সংবাদ থেকে। প্রাচীনকালে বাংলাদেশ অঞ্চল যে সব জনপদে বিভক্ত ছিল বর্তমান হিসেবে বঙ্গ তার একটি বিভাগ মাত্র যা বর্তমান বাংলাদেশের দক্ষিণ বঙ্গকে বোঝায়। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশের ইতিহাসের পাঠে পুন্ড্র, গৌড়, সুবর্নগ্রামের ইতিহাসকেই বঙ্গের ইতিহাস হিসেবে দেখানো হয়, যেখানে প্রাচীনকাল থেকেই মাদারিপুর সংলগ্ন অঞ্চল অর্থাৎ কোটালিপাড়া অথবা বিক্রমপুর কেন্দ্রিক স্বাধীন বঙ্গ রাষ্ট্রের উপস্থিতি প্রায় উপেক্ষিত। গুপ্ত পূর্ব যুগে কোটালিপাড়া কেন্দ্রিক বঙ্গ, গুপ্ত পরবর্তী ও শশাঙ্ক পূর্ববর্তী কোটালিপাড়া কেন্দ্রিক স্বাধীন বঙ্গ, শাশাঙ্ক ছিলেন গৌড়েশ্বর অথচ ইতিহাস পাঠে বলা হয় বঙ্গের প্রথম স্বাধীন নৃপতি শশাঙ্ক! পাল পূর্ববর্তী যুগকে মাৎস্যন্যায় বলা হয়েছে যা আমাদের বঙ্গের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, গৌড় কেন্দ্রিক পাল সম্রাজ্যের রাজা ধর্মপালের সময় থেকে রাজা প্রথম বিগ্রহপালের সময় পর্যন্ত মাত্র ১০০ বছর বঙ্গ পাল সম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল অথচ পালদের বলা হয় বাংলার সম্রাজ্য! সেন পূর্ববর্তী বিক্রমপুর কেন্দ্রিক স্বাধীন বঙ্গ, সেন রাজারা নিজেদের গৌড়েশ্বর দাবি করলেও গৌড়ে সুলতানি শাসনাভুক্ত হলে তারা বিক্রমপুর কেন্দ্রিক স্বাধীন বঙ্গের অধিপতি হন, ইতিহাস পাঠে বখতিয়ার খলজিকে বঙ্গ বিজেতা বলা হলেও তিনি ছিলেন মূলত গৌড় বিজেতা আর এর পরও প্রায় ২৫০ বছর বঙ্গ স্বাধীন ছিল। পাল ও সেন রাজাদের আদর্শ ছিল গৌড়েশ্বর হিসেবে পরিচিত হওয়া। আওরঙ্গজেবের আমলে যে অংশ নবাব শায়েস্তাখানের শাসনাধীন ছিল তাকে বলা হতো গৌড় মণ্ডল। তবে সমগ্র বাংলাকে গৌড়ীয় করার প্রচেষ্টা সার্থক হয় নাই। আসলে তা শেষে বঙ্গ নামই গ্রহণ করেছে। বর্তমান বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের যে অংশকে বৃহত্তর বঙ্গ দেশ বলা হয় তা মূলত সুলতানি আমলে শাহী বাঙ্গালা সালতানাতের মাধ্যমে সূত্রপাত, এরপর মুঘল আমলে সুবাহ বাংলা প্রদেশ এবং সর্বশেষ ব্রিটিশ আমলে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির মাধ্যমে পূর্ণতা পায়।
মাদারিপুরের ইতিহাস বলতে আমরা ফরিদপুরের তথা বৃহত্তর বঙ্গ দেশের ইতিহাসের আলোকে পর্যালোচনা করি, সেখানে মূল বঙ্গ আর মাদারিপুর অঞ্চলের প্রকৃত ইতিহাস উপেক্ষিত হয়। যেমন মুঘলদের বিপক্ষে বিক্রমপুরের কেদার রায় ছিলেন এক আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, সাহসী বীর। বারো ভূঁইয়াদের মধ্যে ঈসা খাঁ’র গুণগান গাইতে গাইতে ঐতিহাসিকদের মনোযোগ না পাওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ বাঙালী শাসক। আবার বর্তমানে বিক্রমপুর বলতে মুন্সিগঞ্জকে নির্দেশ করা হয় যদিও মুন্সিগঞ্জ অঞ্চল ছিল বিক্রমপুরের উত্তরাংশ এবং মূল বিক্রমপুরসহ দক্ষিণে চিকন্দি থেক ইদিলপুর পর্যন্ত বিস্তৃত যা ছিল পদ্মার উত্তর পাড়ে আর মাদারিপুর ছিল পদ্মার দক্ষিণ পাড়ে। মূলত মাদারিপুরের ইতিহাস চন্দ্রদ্বীপ, কোটালিপাড়া, বিক্রমপুর, ইদিলপুর ও সমতটের সাথে সম্পৃক্ত।
এই গ্রন্থে সংক্ষিপ্ত আকারে মাদারিপুরের ইতিহাস পরিক্রমা উল্লেখ করা হয়েছে।
Title | : | মাদারিপুর ইতিবৃত্ত (পেপারব্যাক) |
Publisher | : | বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মাদারিপুর |
Edition | : | 1st Published, 2024 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
Reviews and Ratings
How to write a good review
৳ 0