Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
একাডেমিক বইয়ে প্রতি ১০০০ টাকার অর্ডারে একটি করে খাতা ফ্রি ও ডেলিভারি ফ্রি
প্যাকেজ বিবরণ
আয়েশা বিনতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহা:
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নারী। কুরআন, হাদিস, ফিকহ, তাফসিরসহ ইলমে ওহির প্রতিটি শাখায় ছিল তাঁর গভীর পাণ্ডিত্য। স্বভাব-গুণ, ধর্ম-কর্ম ও অনুপম চরিত্রের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। নবিজির প্রিয়তমা আয়েশার জীবনে রয়েছে ঐশী পাঠ গ্রহণের অনুপ্রেরণা। আছে বর-বধুয়ার প্রেম-প্রণয়ে সুখী-সমৃদ্ধ জীবন গঠনের অমূল্য সবক। আছে শ্বশুরালয় ও নিকটাত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জীবন পরিচালনার এক অনুপম নির্দেশনা। এখানে আছে একজন চপলা তরুণীর স্বামী-সতীন, ঘর-সংসার ও পরিবার-পরিজন সুচারুরূপে সামলে নেওয়ার সুন্দর শিক্ষা। আছে একজন গৌরবান্বিত মহীয়সী স্ত্রীর হাসি, কান্না, অভিমান ও বিরহের শৈল্পিক চিত্রায়ণ। আছে মুসলিম জাহান পরিচালনায় কীভাবে একজন নারী পরামর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। আরও আছে একজন নারীর উম্মাহর মাঝে ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামী প্রয়াস। প্রিয় পাঠক, আপনার হাতে থাকা বইটি নবিজির প্রিয়তমা উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার গৌরবময় জীবনের ইতিবৃত্ত। বইয়ের নান্দনিক উপস্থাপনায় আপনি হারিয়ে যাবেন নবিপ্রেমের গভীর ধ্যানে। ইতিহাসের গল্পময় উপস্থাপনা আপনাকে দেবে সুখপাঠ্যের দারুণ অনুভূতি!
হাফসা বিনতে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহা:
উমর ইবনুল খাত্তাবের কন্য হাফসা। মাত্র ২০ বছর বয়সে বিধবা হয়ে যান। শোক ও বেদনাগুলো ভুলিয়ে দিতে মহান আল্লাহ তাঁর সৌভাগ্যের দুয়ার খুলে দেন। তিনি হয়ে যান উম্মুল মুমিনিন, প্রিয়নবির প্রিয়তমা, রাদিয়াল্লাহু আনহা। একটা দাম্পত্যসম্পর্কের সুখদুখের সবকিছু আছে নবিজির সংসারে। মান-অভিমান ও পাওয়া না-পাওয়ার মধ্য দিয়ে কীভাবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রিয় হয়ে থাকা যায়, দ্বীনের প্রতি অনুগত থেকে কীভাবে সব কষ্ট উপেক্ষা করা যায়, এই বাস্তবতার দর্পণ নবিজির সংসার। তাই উম্মাহাতুল মুমিনিনদের আচার, অভ্যাস ও যাপিত জীবনের চরিত্রগুলো আমাদের জন্য অনুকরণীয়। নবিজীবনের বিয়েতালাক ও ভাঙাগড়ার রোমাঞ্চকর ইতিহাসের পাশাপাশি ইসলামের তালাক, হিল্লে বিয়ে, বিধবা বিয়ে এবং সমাজের নানা অসংগতিসহ আরও অনেক জরুরি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই বইয়ে। খুবই দারুণ ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপিত হয়েছে উম্মাহাতুল মুমিনিন হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহার জীবনী ও সিরাতে রাসুলের খুঁটিনাটি।
খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ রাদিয়াল্লাহু আনহা:
উম্মুল মুমিনিন খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ। মহানবির জীবন-সংগ্রামের একান্ত সহচর। ভালোবাসা, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ আর দুনিয়ার জীবনকে তুচ্ছ করার এক রোমাঞ্চকর জীবনকাহিনি রচনা করে গেছেন তিনি। জাহিলিযুগে বংশমর্যাদা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থসম্পদ ও উত্তম আখলাকে সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিলেন; কিন্তু মহান চরিত্রের অধিকারী নবুয়তের সুসংবাদপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে নিজের সবকিছু সঁপে দিয়েছেন। ফলে তাঁর প্রতি প্রেরিত হয়েছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ও সালাম, জিবরিলের পক্ষ থেকে সালাম, কিয়ামত পর্যন্ত আগত মুসলিম উম্মাহর পক্ষ থেকে সালাম। জাহিলিয়াতের সমাজব্যবস্থা, মহানবির হেরা গুহার সাধনা, নবুয়তের সুসংবাদ, পুরো দুনিয়াকে প্রকম্পিত করা এক ইলাহের আহ্বান, জাহিলিয়াতের সঙ্গে ইসলামের সংঘাত, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বন্দিজীবন, দ্বীনের জন্য নিজের সর্বস্ব বিলীন-এর সবকিছু। এককথায় কুরআন নাজিল, ইসলামের সূচনা ও নতুন পৃথিবী গড়ার সংগ্রাম-সাধনার বিস্তারিত উঠে এসেছে তাঁর জীবন-রচনায়। গল্পভাষ্যের ব্যতিক্রমী অনন্য অসাধারণ শৈলীতে রচিত হয়েছে এই বই। এর পাঠ সাবলীলতা আপনাকে আনন্দিত করবে। শব্দের হৃদয়গ্রাহী বুনন নতুন পৃথিবী গড়ার সংগ্রাম সাধনায় আপনাকে আত্মত্যাগে প্রত্যয়ী করে তুলবে।
মারিয়া কিবতিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা:
নবিজির ১৩ জন স্ত্রীর মধ্যে একজন ছিলেন মহরবিহীন। মিসর-সম্রাট মুকাওকিস নবিজির প্রতি শ্রদ্ধাবনত হয়ে মারিয়া নামে একজন নারী উপহার দেন। তাঁর গর্ভে নবিজির সন্তান ইবরাহিমের জন্ম হয়। সাধারণ স্ত্রীদের বাইরে নবিজির দাম্পত্যজীবনের ভিন্নমাত্রিক আলোচিত বিষয় মারিয়া কিবতিয়া। কী সৌভাগ্যবান সেই নারী। দুজাহানের বাদশাহকে মহরবিহীন বিয়ে করেন। নিজের গর্ভে তাঁর সন্তান ধারণ করেন। খাদিজা আর মারিয়ার গর্ভেই শুধু নবিজির সন্তান জন্ম হয়েছিল। মারিয়া কীভাবে মহরবিহীন স্ত্রী হয়ে গেলেন? মারিয়া কি দাসী ছিলেন নাকি স্বাধীন নারী? সুরাইয়া স্ত্রী কী? তিনিও কি আল্লাহর ঘোষিত উম্মুল মুমিনিন? মহানবির পবিত্র জীবনচরিতের বিস্ময়কর অধ্যায় মারিয়ার সঙ্গে নবিজির সংসার। সিরাতের জ্ঞানে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পড়ুন বিশুদ্ধ বর্ণনার আলোকে রচিত এই বই।
মায়মুনা বিনতে হারিস রাদিয়াল্লাহু আনহা:
জীবনের দুটি দিক। একটি একান্ত ও ঘরোয়া; আরেকটি প্রকাশ্য ও বাইরের। মানুষের বাইরের জীবন সম্পর্কে তো তার কাছে ও দূরের অনেকেই জানে। কিন্তু ঘরোয়া জীবন সম্পর্কে তার ঘনিষ্ঠরাও কি সবাই জানে! এটা জানা সম্ভব নয়; আর উচিতও নয়। কিন্তু কারও কারও ঘরোয়া জীবনের কিছু কিছু ব্যবহার-বিষয় তো ক্ষেত্রবিশেষ জানতেও হয়। অনেক সময় বোঝা ও শেখার জন্যই। সেক্ষেত্রে কী করণীয়! আর এ ক্ষেত্রে মানুষটি যদি হন সর্বশেষ নবী ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল—সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম—যাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত-কণা উম্মতের জন্য শিক্ষণীয় ও সংরক্ষণীয়; যাঁর জীবনের প্রতিটি বিন্দু অফুরন্ত বরকত ও কল্যাণে শোভিত; এবং যাঁর জীবন অনুসরণ করার জন্য রয়েছে আসমানি নির্দেশ—তখন তা জানার কী উপায়! নিশ্চয় এর সহজ ও সঠিক উত্তর হবে, রাসুলের স্ত্রীগণই এ সম্পর্কে বলতে পারবেন সবচেয়ে ভালো। নবীজি যাঁদের সঙ্গে যাপন করেছেন ঘরোয়া জীবন এবং যাঁরা ছিলেন নবীজির একান্ত জীবনের সঙ্গী। আর তাই এ কারণেই নবীজির জীবনসঙ্গিনী উম্মাহাতুল মুমিনিনের জীবনী পাঠের বোধহয় বিকল্প নেই। সৃষ্টিগতভাবেই রয়েছে মানুষে মানুষে তফাত। হাতের পাঁচ আঙুলের মাঝে আছে যেমন; মেধা বোধ-বুদ্ধি প্রকাশেও রয়েছে তেমন। রাসুলের জীবনসঙ্গিনী ১১জন। তাঁরা প্রত্যেকেই আপন আপন বিষয়ে অনন্য। নিজ নিজ সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়েই তাঁরা রাসুলকে ধারণ করেছেন। কিন্তু মানুষে মানুষে উপলব্ধি ও উপস্থাপনগত পার্থক্যের কারণেই দৃষ্টি-বিষয়-বক্তব্য ভিন্ন হয়। আর এ ভিন্নতার কারণেই নবীজির শেষ জীবনসঙ্গিনী হজরত মায়মুনা রাদিয়াল্লাহু আনহার জীবনীগ্রন্থটি আমাদের পড়া দরকার। সেইসঙ্গে জানা দরকার— তিনি কীভাবে কতটা নবীজির জীবনকে ধারণ করেছেন; এবং তাঁর জীবনের কতখানি জুড়ে আছেন নবীজি। তা ছাড়া উম্মাহাতুল মুমিনিনের মাঝে হজরত মায়মুনা রাদিয়াল্লাহু আনহার অভিনিবেশ ও অনুধাবনগত বৈশিষ্ট্যের বিষয়টি তো আছেই। দেশ ও জাতিগতভাবে মানুষের মাঝে পার্থক্য আছে। আছে তেমনি চিন্তার চর্চা এবং ভাবনার বিন্যাসগত দিক থেকেও। ইরাকির কাছে যেটি প্রয়োজনীয়, মিশরির কাছে সেটি অপ্রয়োজনীয়ও হতে পারে। ইরানির কাছে যেটি দরকারি; সুদানির কাছে সেটা দরকারি না-ও পারে। কোনো কিছু সবার চোখে সমানভাবে নিরূপণ হয় না; আর হওয়ার মানেও নেই। প্রিয় পাঠক! এসব ফারাক ও ভিন্নতার কথা ভাবনায় নিয়ে বাংলা ভাষায় উম্মাহাতুল মুমিনিন সিরিজ রচনার উদ্যোগ-আয়োজন গ্রহণ করার বড় একটি কারণ। তা ছাড়া আমাদের সময় ও সমাজ এবং দেশ ও পরিবেশের জন্য দরকারি কথাটি উপযোগী ভাষা-বিন্যাসে বলার একটি সুপ্ত বাসনা তো আছেই।
রায়হানা বিনতে শামউন ইবনে জায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহা:
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইহুদিরা নানা রকম ষড়যন্ত্র ও গাদ্দারি করে যাচ্ছিল। ইসলাম ও মুসলমানদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিতে তারা মক্কার কাফিরদের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। এই যুদ্ধের পর নবিজি মদিনার ইহুদি গোত্র বনু কুরাইজাকে অবরোধ করেন। তাদের সকল পুরুষকে হত্যা করেন ও নারীশিশুকে দাসদাসী হিসেবে বন্দি করেন। বনু কুরাইজার যুদ্ধবন্দি হিসেবে রায়হানা বিনতে শামউন দাসী হিসেবে নবিজির ঘরে আসেন। নবিজি তাঁকে ইসলাম গ্রহণের প্রস্তাব করেন। প্রথমে তিনি ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। কিছুদিন পর ইসলাম গ্রহণ করলে নবিজি তাঁকে বিয়ে করেন। এভাবেই রায়হানা বিনতে শামউন বিন জায়েদ নবিজির স্ত্রী হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন—রাদিয়াল্লাহু আনহা। কিন্তু নবিজির সাথে তাঁর সংসার এক নাটকীয় আখ্যানে পরিণত হয়। তাঁর সাথে নবিজির বাসর হয়নি। তিনি নবিজির বাসর গ্রহণে অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে নবিজি তাঁকে তালাক দিয়ে দেন; তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো—রায়হানা বিনতে শামউন বিন জায়েদের বিয়ে ও তালাক নিয়ে সব তথ্যই মতভেদপূর্ণ। নবিজীবনের বৈচিত্র্যময় বিয়ে, সংসার ও রাষ্ট্রপরিচালনার অনেক দিকই আমাদের কাছে অনালোচিত। সিরাতের গভীর জ্ঞানে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজন এসব সম্বন্ধে জানা। গল্পভাষ্যের সিরাতে নববির আলোকময় অধ্যায় আর ইহুদি চরিত্রের আদ্যোপান্ত নিয়ে লিখিত এই বই আপনার জ্ঞানের আঙিনা বিস্তৃত করবে নিশ্চিত।
সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই রাদিয়াল্লাহু আনহা:
সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই। একজন ইয়াহুদি নারী। কী বিস্ময়কর তাঁর জীবনকাহিনি! বাদশাহর মেয়ে থেকে দাসী! দাসী থেকে বাদশাহর স্ত্রী! একপর্যায়ে নিজের স্বপ্নের মতো করে আকাশের ঝলমলে চাঁদ নিজের কোলে তুলে নিলেন! নির্মলতা, সততা আর একনিষ্ঠতার ফলস্বরূপ মহান আল্লাহ তাঁকে দুনিয়া ও আখিরাতের মহা সাফল্যে পৌঁছে দেন। বানিয়ে দেন দুজাহানের বাদশাহর স্ত্রী! ফলে তিনি হলেন উম্মাহাতুল মুমিনিন—কিয়ামত পর্যন্ত আগত মুসলিম উম্মাহর মা। তিনি ছিলেন ইমানি দৃঢ়তা, অতিথিপরায়ণতা, দানশীলতা, ধৈর্য, সহনশীলতা ও সাহসিকতার উপমা। মহান রাসুল তাঁকে নিজ পরিচয় এভাবে তুলে ধরতে বলেছিলেন—‘আমার স্বামী নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আমার বংশীয় পিতা নবি হারুন আ., আমার বংশীয় চাচা নবি মুসা আ.।’ কী গৌরব আর সাফল্যের উজ্জ্বলতায় আলোকিত জীবন! যাঁর উৎকর্ষ পবিত্র চরিত্র মাধুরিমা মহান আল্লাহ আমাদের জীবনাদর্শ হিসেবে দিয়েছেন। সেই মহান নারীর জীবনগল্পগুলোই জীবন্ত হয়ে চিত্রিত হয়েছে এই বইয়ে।
সাওদা বিনতে জামআ রাদিয়াল্লাহু আনহা:
দুঃখবেদনার অন্ত নেই। কখনও গালি খেতে হয়, কখনও শারীরিক আঘাত। চারদিক থেকে মেরে ফেলার হুমকি। অন্যদিকে সর্বকাজের সহযোগী স্ত্রী মারা গেলেন। রাজনৈতিকভাবে নিরাপত্তা প্রদানকারী চাচাকেও হারিয়ে ফেললেন। ভীষণ একাকিত্ব ও অসহায়ত্ব যেন তাঁকে গিলে ফেলছে। ঠিক সেই কঠিন সময়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাশে দাঁড়ালেন অসাধারণ গুণবতী এক বিধবা। রূপগুণে তিনি যেমন ছিলেন আকর্ষণীয়, তেমনি স্বামীর আনুগত্য, সন্তান লালনপালন, রান্নাবান্না ও সাংসারিক কাজেও ছিলেন অনন্য। ইমানের আলোয় তাঁর হৃদয় ছিল উজ্জ্বল সরলতায় উদ্ভাসিত। ইসলামের সূচনাকালেই ইমান গ্রহণ করেন। একপর্যায়ে নবিজির স্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তারপর সুখের চাঁদ হয়ে নবিজির সংসারে আলো ছড়াতে লাগলেন। তাঁর উপাধি উম্মুল মুমিনিন—মুমিনদের মা। নাম সাওদা বিনতে জামআ। আল্লাহ বলেন—‘রাদিয়াল্লাহু আনহা।’ ‘সংসার সুখের হয় রমণীয় গুণে’ এই প্রবাদবাক্যের বাস্তব প্রতিবিম্ব ছিলেন উম্মুল মুমিমিন সাওদা। নিজের সর্বস্ব দিয়ে স্বামীকে ভালোবাসার অনন্য নজির স্থাপন করে পৃথিবীর সকল নারীর অনুসরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবেন কিয়ামত পর্যন্ত। তাঁকে জানতে পড়ুন এই বই।
উম্মে হাবিবা বিনতে আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহা:
উম্মুল মুমিনিন উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা। প্রায় পনেরো বছর পর আপন পিতা আবু সুফিয়ানের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ! আবেগ-উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসায় উথলে উঠল বাবা-মেয়ের মন। দীর্ঘ সফরের ক্লান্ত শরীর নিয়ে মক্কার এই প্রভাবশালী নেতা মেয়ের ঘরে এসে বিছানায় বসতে চাইলেন। কিন্তু না, বসতে পারলেন না। দ্রুত বিছানা গুটিয়ে বললেন, এই বিছানা আপনার জন্য না, এটি দোজাহানের সরদার আল্লাহর রাসুলের বিছানা। আপনি তো মুশরিক, অপবিত্র ও নাপাক! মেয়ের এহেন আচরণে আবু সুফিয়ান যেন আকাশ থেকে পড়লেন! নবিজির প্রতি ঈমান, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বিস্ময়কর এই উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন নবিপত্মী উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা। শত্রুতা, নিপীড়ন, আত্মত্যাগ, হিজরত ও নানান সংকটের মাঝে ঘরসংসার করার রোমাঞ্চকর জীবনকাহিনি। তাঁর জীবনালোচনার সঙ্গে মিশে আছে একটি কুফরি সমাজ ঈমানি আলোকধারায় আলোকিত হওয়ার ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস। এতে উঠে এসেছে একজন মুমিনের সামগ্রিক জীবনের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ অনেক বার্তা ও ঈমানি চেতনার প্রায়োগিক শিক্ষা। গ্রহণযোগ্য সূত্রে মুগ্ধকর বাক্য বুননে গল্পভাষ্যে পড়ুন ঈমান জাগানিয়া এই জীবনচরিত।
উম্মে সালামা বিনতে উমাইয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা:
উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা। বংশীয় আভিজাত্য, সৌন্দর্য ও অনুপম চরিত্রে আরবের অনন্য প্রসিদ্ধ নারী। দ্বীনের জন্য তাঁর ত্যাগ ও কুরবানির ঘটনাগুলো কৃত্রিম রোমাঞ্চকর গল্পের চেয়ে বেশি নাটকীয়। স্বামীপ্রেমী উম্মে সালামা যখন বিধবা হন, তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন আবু বকর-উমরসহ আরবের প্রভাবশালী আরও অনেকেই। তিনি সবার প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করেন। নবিজির প্রস্তাবেও প্রথমে রাজি হননি। তিনি মনে করতেন, পৃথিবীর আর কোনো পুরুষই আবু সালামার মতো তাঁকে সুখী ও সন্তুষ্ট রাখতে পারবে না। নবিজি তাঁর চার কন্যার দায়িত্ব নিজে গ্রহণ করেন এবং তাঁকে বিয়ে করেন। সৌন্দর্য ও আভিজাত্যে নবিপত্তি আয়েশাও তাঁর সামনে নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন। সত্য বলতে তিনি কাউকে পরোয়া করতেন না। তাঁর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও ফিকহি পাণ্ডিত্যে নবিজি মুগ্ধ ছিলেন। নবিজীবনের একান্ত ঘরোয়া ব্যাপারগুলো তিনি অন্যদের কাছে উপস্থাপন করতেন। নবিপ্রেমী প্রতিটি মানুষের কাছে কৌতূহলীয় পিপাসা নবিজির সংসার। এই সংসারে আছে অভাব-অনটনের সাথে দান-সাদাকার বিস্ময়ে বিমূঢ় হওয়ার সব রূপকল্পের মিশেল। বিশুদ্ধ তথ্যের ভিত্তিতে গল্পভাষ্যের নান্দনিক উপস্থাপনায় আহমাদ সাব্বির এঁকেছেন নবিজীবনের এই অধ্যায়। পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে আপনি বলবেন, কী দারুণ।
জাইনাব বিনতে খুজাইমা রাদিয়াল্লাহু আনহা:
জাইনাব বিনতে খুজাইমা রাদিয়াল্লাহু আনহা। ইসলামের কারণে তিনি জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে যান। কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে স্বামী শহিদ হন। দরিদ্রতা, অর্থকষ্ট তো আছেই। এসবের মধ্যেও আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ভালোবাসায় ছিলেন নিবেদিত। দ্বীনের প্রতি একনিষ্ঠতা, ত্যাগ ও অবদানের কারণে স্বামীর মৃত্যুর পর নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বিয়ে করেন। নবিজির সংসার করতে পেরেছিলেন মাত্র কয়েক মাস। তারপর মহান আল্লাহ তাঁকে দুনিয়া থেকে নিয়ে যান। তিনি গরিব, দুঃখী ও অসহায়ের পাশে দাঁড়াতেন। দুহাত ভরে দান করতেন। ফলে তাঁর নাম হয়ে যায় উম্মুল মাসাকিন-গরিব-দুঃখীর মা হিসেবে। মহান আল্লাহ সম্মানিত করে উপাধি দেন উম্মুল মুমিনিন রাদিয়াল্লাহু আনহা। আজকের এই অন্ধকারে নিমজ্জিত পৃথিবীকে যদি আমরা আলোকিত করতে চাই, যদি চাই আমাদের মা-বোন-কন্যারা পৃথিবীবাসীর জন্য জ্ঞান ও কল্যাণের আলোকমশাল হয়ে থাকবে, তবে উম্মুল মুমিনিনদের জীবনাচার হবে তাদের পাথেয়।
জাইনাব বিনতে জাহাশ রাদিয়াল্লাহু আনহা:
আরবে পালকপুত্র ছিল ঔরসজাত সন্তানের মতো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পালকপুত্র ছিলেন জায়েদ বিন হারিসা রা.। মহান আল্লাহ পালকপুত্র নিয়ে সমাজের কুপ্রথা বন্ধ করতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক ঘটনার অবতারণা করেন। জাইনাব বিনতে জাহাশ ছিলেন কুরাইশি নারী। বংশীয় আভিজাত্য, রূপ- সৌন্দর্য ও অর্থবিত্ত সবকিছুতেই তিনি ছিলেন ঈর্ষণীয়। জায়েদ বিন হারিসার সাথে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের সংসার স্বাভাবিক যাচ্ছিল না। মনোমালিন্য যেন লেগেই থাকে। একপর্যায়ে বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর আল্লাহর নির্দেশে নবিজি জাইনাবকে বিয়ে করেন। নবিজির এই বিয়ে পুরো আরবে তোলপাড় সৃষ্টি করে। সমালোচনার ঝড় ওঠে। মহান আল্লাহ পালকপুত্র-কেন্দ্রিক আরবের কুপ্রথা মিটিয়ে দিতে আয়াত নাজিল করেন। ফলে সবার মুখ বন্ধ হয়। শত শত বছরের জাহিলিপ্রথা বিলুপ্ত হয়। অন্যদিকে জাইনাব হয়ে যান উম্মুল মুমিনিন রাদিয়াল্লাহু আনহা। ইবাদাত, উত্তম আখলাক, দান-সাদাকা ও দ্বীনের প্রতি জাইনাবের একনিষ্ঠতা কিয়ামত পর্যন্ত আপত উম্মাহর জন্য দৃষ্টান্ত। এ বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে নবিজীবনের বৈচিত্র্যময় আরও অনেক কিছু।
জুয়াইরিয়া বিনতে হারিস রাদিয়াল্লাহু আনহা:
শাহজাদি বাররাহ বনু মুস্তালিক যুদ্ধে বন্দী হলেন মুসলমানদের হাতে। প্রাচীন যুদ্ধরীতি অনুযায়ী তিনি এখন দাসী। মুনিবের সাথে দাসত্ব থেকে মুক্তির চুক্তি করতে গিয়ে তিনি উদ্ভাসিত হলেন হিদায়াতের আলোয়। ইসলামের মহানুভব আদর্শ তাঁকে কেবল দাসত্ব থেকেই মুক্ত করেনি, মুক্ত করেছে কুফরের অন্ধকার থেকেও। এরপর তাঁকে আসীন করেছে মর্যাদা ও সম্মানের সুউচ্চ আসনে। দোজাহানের বাদশাহর স্ত্রী হয়ে তিনি বরিত হলেন 'সমগ্র মুসলিম উম্মাহর মা' হিসেবে। নবিজি তাঁর নাম রাখলেন 'জুয়াইরিয়া'। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর কাছে মা-বাবা, ভাই-বোন ও আত্মীয়স্বজনের চেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে গেলেন নবিজি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। নবিপ্রেমের কী অনুপম দৃশ্য! ইমানের দৃঢ়তা তাঁকে পৃথিবীর সবকিছু ছেড়ে দিতে প্রস্তুত করে তোলে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাজনৈতিক সমঝোতা ও ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিতেই তাঁকে বিয়ে করেন। এই বইটি রচিত হয়েছে জুয়াইরিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহার জীবনী নিয়ে। এতে নবিজীবনের ঘরসংসার আর দাম্পত্যজীবনের টুকিটাকির সঙ্গে ইসলামের নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে গল্পভাষ্যে। অত্যন্ত সাবলীল ও প্রামাণ্য তথ্যে সবকিছু উপস্থাপিত হয়েছে নিখুঁত বুননে।
Title | : | উম্মুল মুমিনিন সিরিজ (১৩টি খন্ড একত্রে) |
Author | : | বিভিন্ন (লেখক) |
Publisher | : | পড় প্রকাশ |
Edition | : | 1st Published, 2024 |
Number of Pages | : | 1864 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
If you found any incorrect information please report us